বাড়ির কর এড়াতে দুই প্রবীণের বিয়ে

কী দিনকাল পড়ল। কর ফাঁকি দিতে মানুষ কী কী-ই না করতে পারে। তেমনই এক অত্যাশ্চর্য নজির করলেন আয়ারল্যান্ডে ডাবলিনের দু’জন ব্যক্তি। ম্যাট মার্ফি (৮৩ বছর) আর মাইকেল ওসুলিভান (৫৮ বছর)। শনিবার এরা একে অপরকে বিয়ে করলেন।

মনে হচ্ছে, তো এ আর এমন কী নতুন কথা! আজকাল তো এমন হর হামেশাই হচ্ছে চারদিকে। আবার এ-ও মনে হচ্ছে এর সঙ্গে কর ফাঁকির কী সম্পর্ক আছে! তাই তো?

আছে আছে, সবটাই আছে। তা হলে শুনুন-এঁরা কেউই সমকামীও নয় আবার উভকামীও নয়। দু’জনই বিষমকামী। তাও একে অপরকে বিয়ে করলেন। কারণ শুধুমাত্র বাড়ির কর দেওয়ার হাত থেকে বাঁচতে।

ব্যাপারটা হল এ রকম-মার্ফি আর মাইকেল ৩০ বছর ধরেই একে অপরকে চেনেন। খুবই ভালো বন্ধু। বর্তমানে দু’জনেই খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। মাইকেল বর্তমানে গৃহহীন, আর মার্ফি জায়েন্ট সেল আর্থারিটিসে ভুগছেন। মাইকেল বহুদিন বন্ধু মার্ফির দেখাশোনা করছেন। কিন্তু সেই দেখাশোনার উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেওয়ার ক্ষমতা মার্ফির নেই। তাই মার্ফি সিদ্ধান্ত নেন তিনি এর মূল্য চোকাবেন নিজের বাড়িটা বন্ধুর নামে লিখে দিয়ে। তাতে মার্ফি মারা যাওয়ার পর বন্ধু মাইকেলকে এই বাড়ি ছেড়ে কোথাও চলে যেতেও হবে না। তিনি মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই পাবেন। আর এখন মার্ফিও একজন সঙ্গী পাবেন।

কিন্তু এমন সিদ্ধান্তের পর তারা হিসেব করে দেখলেন এই ভাবে বাড়ির মালিক হলে তাতে মাইকেলকে বাড়ির জন্য কর দিতে হবে ৫০ হাজার ইউরো। আর মাইকেলের পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। উল্টো তাকে বাড়িটাই বিক্রি করে দিতে হবে। তবে করের টাকা শোধ করা সম্ভব হবে। তাই তারা সিদ্ধান্ত নেনে বৈবাহিক সূত্রে এই বাড়ি হস্তান্তরের কাজটা করবেন। তাতে আর এই কর দিতে হবে না। অবশেষে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হন দু’জনে।

মাইকেল বিয়ের অনুষ্ঠানের পর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এরপরও তারা একে ওপরকে বন্ধুর মতোই ভালোবাসবেন।

তিনি আরও বলেন, কর বিষয়ক কর্মকর্তা আর প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এই বিয়েতে সম্মতি দিয়েছেন। বলেছেন, তারা বেআইনিভাবে কিছুই করেননি। সবটাই আইনসম্মত।

উল্লেখ্য, ম্যাট মর্ফির এটা প্রথম বিয়ে হলেও মাইকেলের আগের পক্ষের স্ত্রী আছেন। তাদের তিনটি সন্তানও আছে। তারা দু’জনে আয়ারল্যান্ডের এলজিবিটি (লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্সজেন্ডার) সম্প্রদায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। কারণ তারা না থাকলে আর দেশে সমলিঙ্গ বিয়ের আইনত স্বীকৃতি না থাকলে তাদের এই বিয়ে কখনওই সম্ভব হত না। ২০১৫ সালের মে মাস থেকে আয়ারল্যান্ডে সমলিঙ্গ বিয়ে আইনত স্বীকৃতি পায়।সূত্র: গার্ডিয়ান