বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ৩৪৭ শতাংশ
আমদানি ব্যয় বাড়লেও সে অনুযায়ী বাড়ছে না রফতানি আয়। ফলে বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ২৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ৮২ কোটি ডলার বা ৩৪৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি ব্যয় যে হারে বেড়েছে, সে তুলনায় রফতানি আয় না বাড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। একই সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স কমায় ও সেবা খাতের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে চলতি হিসাবের ভারসাম্য। এ অবস্থা বিদ্যমান থাকায় দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ভালো নয় বলে মনে করছেন তারা।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এর মূল কারণ সার্ভিকভাবে আমদানি যে হারে হয়েছে সেই হারে রফতানির প্রবৃদ্ধি বাড়েনি। গত বছরের তুলনায় রফতানি প্রবৃদ্ধি ৮ থেকে ৯ শতাংশে কমেছে। যে কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাইতে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ২৯৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় হয়েছে ৪০০ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ হিসাবে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ১০৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৩৪৭ শতাংশ বেশি।
২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরজুড়ে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল। এতে বৈদেশিক দায় পরিশোধে সরকারকে বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৪৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণাত্মক হয়েছে। যা এর আগের অর্থবছরে একই সময়ে উদ্বৃত্ত ছিল ৩৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ সময়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের বেতনভাতা পরিশোধে সেবামূল্য ব্যয় বেশি হওয়ায় চলতি হিসাবে ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সে হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু গত কয়েক বছর উদ্বৃত্তের ধারা অব্যাহত থাকলেও গেল অর্থবছরে ঋণাত্মক ধারায় চলে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে সেবাখাতে বিদেশিদের বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়েছে ৭৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ৩২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবা বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ৯০ লাখ ডলারে। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ছিল (ঘাটতি) ২৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে মোট ২৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর মধ্যে নিট এফডিআই (বৈদেশিক বিনিয়োগ) এসেছে ১৬ কোটি ডলার। যা আগের বছরে এসেছিল ১৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ হিসাবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিট এফডিআই বেড়েছে ৯ দশমকি ৫৯ শতাংশ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন