বাবাকে বাঁচাতে জবি শিক্ষার্থীর আকুতি
সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলায় হাড়িভাঙ্গা এলাকার নাটানা গ্রামের প্রমানিক পাড়ায় শ্যামলদের বসবাস। নিজেদের বসতভিটে টুকুই তাদের একমাত্র সম্বল। গোলপাতার ছাউনিতে জরাজীর্ণ একটি ঘরের পাশে ছোট্ট অন্য একটি ঘর আছে শ্যামলদের। রান্নার জন্য ছোট উঠানের মধ্যে অস্থায়ী ছাউনির ব্যবস্থা করে সেখানে আছে একটি লাকড়ির চুলা।
এটুকুই শ্যামলদের নিজেদের সম্পদের বিবরণ। বাবা-মা, ভাই এবং ঠাম্মা মিলে পাঁচ জনের সংসার তাদের। দুই ভাইয়ের মধ্যে বয়সের পার্থক্য বছর চারেক মত।
শ্যামল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ইতিহাসের ছাত্র। ছোট ভাই স্বপন এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
বংশগত ভাবে প্রমানিক হলেও পরিবারের কেউ চুলকাটা পেশার সাথে জড়িত নয়। কেননা পরিবারের প্রধান কর্তা শ্যামলের বাবা ছোট থেকেই এই পেশাকে আয়ত্ব করতে পারেননি। কিন্তু জীবন থেমে থাকেনি। পরিবারের সকলের ভরনপোষনের দায়িত্ব যখন শ্যামলের বাবার উপরে তখন এই দায়িত্বের গুরুভার পালনের জন্য তিনি খুঁজে নিয়েছিলেন বিকল্প পথ।
অন্যের ক্ষেতে খামারে, চিংড়ী ঘেরে দিনমজুরের কাজ করে যা পায় তাই দিয়েই পরিবারের ভরণপোষণ করেন। ভরণপোষণ বলতে অর্ধাহারে মাঝেমধ্যে অনাহারে দিনাতিপাত করা। শ্যামলের বাবার একার পক্ষে পরিবারের সবার খাবারের যোগান দেওয়া এবং অন্যান্য আনুসঙ্গিক করচ কষ্টসাধ্য হওয়ায় শ্যামলের মা ও সকাল বিকাল অন্যের জমিতে কাজ করেন।
মাঝেমধ্যে হিমশিম খেলেও শ্যামলের বাবা মা দুই ছেলের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে নিতে পিছপা হননি। ঢাকায় থাকাকালীন নিজের পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশন করে শ্যামল নিজের হাত খরচ চালাত কিন্তু করোনার কারনে সেটা বন্ধ হওয়ায় এক বছরের ও বেশি সময় ধরে বাড়ী বসে আছে। ছোট ভাই স্বপন খুবই নম্র ভদ্র এবং শান্ত স্বভাবের।
বাবা মায়ের কষ্ট সে অন্তর দিয়ে অনুভব করতে পারে। তাই নিজের পড়াশুনার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে সংসারের খরচে সামান্য যোগান দেয়। সবকিছু মিলিয়ে বহু কষ্ট হলেও জোড়াতালি দিয়ে ধিমে ধিমে ঘুরছিল শ্যামলদের সংসার নামের চাকাটি।
কিন্তু মাঝ দিয়ে শ্যামলের বাবার হঠাৎ এক রোগ দেখা দিয়ে সবকিছু উলট পালোট করে দিল। গলা দিয়ে কাশির সাথে রক্ত ওঠা। নিন্মবিত্ত পরিবারে যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন যোগানো কঠিন হয়ে পড়ে সেখানে পরিবারের কারো ডাক্তার দেখানো যে সত্যিই রূপকথার গল্পের মত।
তারপরেও অন্যের থেকে ধার দেনা করে শ্যামলের বাবার ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কিন্তু কোন উন্নতি হয়নি। দরকার আরও একটু ভালো চিকিৎসা এবং নিয়মিত ডাক্তারের ফলোআপের।
এদিকে শ্যামলের মায়ের বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া চড়া সুদের ঋণের বোঝার ভার ও বেড়েই চলেছে।
দিনের পর দিন শ্যামলের বাবার পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে যাচ্ছে। শ্যামলের মা শুধুমাত্র আর্থের টানাপোড়নে বাধ্য হয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। পরিবারের সবচেয়ে কর্মঠ মানুষটির দিনকে দিন শুধুমাত্র টাকার অভাবে এভাবে মৃত্যুর দিকে হেলে পড়া সত্যিই বেদনাদায়ক।
তাই শ্যামলদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে, একটি পরিবারকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে যদি কেউ সামান্যতম এগিয়ে আসেন তাহলে তাতে বেঁচে যাবে শ্যামলের বাবা, একটি পরিবার, সাথে পাঁচ পাঁচটি জীবন।
শ্যামলের বাবা রোগ শয্যায় শুয়ে কাতরাতে থাকে আর স্বপ্ন দেখে আবার সুস্থ হয়ে কাজে যাবে। সকাল সন্ধ্যা কাজ করে টাকা রোজগার করবে। সকল ঋণ শোধ করবে। তার খুব ইচ্ছা শ্যামল পড়ালেখা শেষ করে চাকুরী করে একদিন সংসারের সকল অভাব অনটন কেটে যাবে। কিন্তু কেন জানিনা শ্যামলের বাবার সেই স্বপ্ন দিনকে দিন ম্লান হতে চলেছে।
আসুন সবাই মিলে শ্যামলের বাবার এই সপ্নকে বাস্তবে রূপ দেই। কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি যদি ছোট্ট একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই তাহলে তাতেই খুশি শ্যামলদের পরিবার।
শ্যামলের মোবাইল নম্বর (বিকাশ সহ)+৮৮-০১৭৩৪৫৭৩৯০৭।
অর্থ দিয়ে না পারেন একটু সাহস দিয়ে বা সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিলেই বেঁচে যাবে শ্যামলের বাবা ও একটি পরিবার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন