বালিশ কাণ্ড নিয়ে যা বললেন ড. আসিফ নজরুল
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্রিন সিটি আবাসন প্রকল্পের নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া নয়টি ভবনের ৯৬৬টি ফ্ল্যাটের জন্য আসবাবপত্র কেনা শেষ হয়েছে। এই আসবারপত্র কেনায় ভয়ঙ্কর দুর্নীতি হয়েছে। এসব নিয়ে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা ঝড় উঠেছে।
দেশের সব মানুষের মুখে মুখে এখন এই ভয়ঙ্কর দুর্নীতির চর্চা। এ বিষয় নিয়ে এবার মুখ খুললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। আজ সোমবার (২০ মে) বিকেলে আসিফ নজরুল তার নিজের ফেসবুক পেইজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তার স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল-
বালিশ নিয়ে এতো হৈ চৈ, আমি কোন কিছু লিখলাম না কেন?
লিখিনি কারণ আমি খুব অবাক হইনি এতে। যে দেশে বিনা ভোটে জিতে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা যায়, এরপর আরও পাঁচ বছর থাকার ব্যবস্থা করা যায় আগের রাতে ভোট করে, সে দেশে সব সম্ভব।
রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপ থেকে সতের দিন পর তরতাজা রেশমাকে উদ্ধার, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে টাকা লোপাট, রাস্তা নির্মাণে আমেরিকার চেয়েও কয়েকগুণ বেশী খরচ দেখানো, মুক্তিযোদ্ধার মেডেলের সোনায় খাদ, বালিশকাণ্ড-এরকম আরও বহু উদ্ভট ঘটনার চেয়ে অনেক বড় তেলেসমাতি হচ্ছে ১৬ কোটি লোককে পরপর দুটো নির্বাচনে ধাপ্পা দিতে পারা।
এমন তেলেসমাতি করা সম্ভব যে দেশে সেখানে জবাবদিহিতা থাকে না, থাকে না কোন সততার তাগিদ, বিচারের ভয়। বালিশকাণ্ড শুধু আমাদের একটু ইঙ্গিত দিল, কি ভয়াবহ লুটতরাজ চলছে এদেশে জনগণের সম্পদ নিয়ে।
উল্লেখ্য, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্রিন সিটি আবাসন প্রকল্পের নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া নয়টি ভবনের ৯৬৬টি ফ্ল্যাটের জন্য আসবাবপত্র কেনা শেষ হয়েছে। এর মধ্যে একটি ২০তলা ভবনের ১১০টি ফ্ল্যাটের আসবাবপত্র কেনা ও তা ভবনে ওঠাতে সব মিলে ব্যয় হয়েছে ২৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ২৯২ টাকা।
২০তলা ওই ভবনটির প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিটি বালিশ কেনা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা করে; ফ্ল্যাটে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা। ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা করে কেনা প্রতিটি রেফ্রিজারেটর ওপরে ওঠাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১ টাকা। একেকটি ওয়াশিং মেশিন কেনা হয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা দরে, ফ্ল্যাটে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৩০ হাজার ৪১৯ টাকা করে। পাঁচ হাজার ৩১৩ টাকা দরে একেকটি ইলেকট্রিক কেটলি কেনার পর তা ভবনে ওঠানো হয়েছে দুই হাজার ৯৪৫ টাকা খরচ করে। একইভাবে প্রতিটি আয়রন কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে চার হাজার ১৫৪ টাকা, আর তা ভবনে ওঠানোর খরচ দেখানো হয়েছে দুই হাজার ৯৪৫ টাকা। এ ছাড়া রুম পরিষ্কার করার মেশিন কিনতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ১৮ টাকা, ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ছয় হাজার ৬৫০ টাকা। প্রতিটি চুলা কিনতে খরচ করেছে সাত হাজার ৭৪৭ টাকা, ভবনে ওঠাতে খরচ দেখিয়েছে ছয় হাজার ৬৫০ টাকা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন