বাল্যবিবাহ রোধে সাতক্ষীরায় ইতালিয়ান ডোনারদের সাথে ঋশিল্পীর মতবিনিময়
বাল্যবিবাহ মানেই প্রতিভার পতন। তাই বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে শক্তিশালী সামাজিক ব্রিগেড গড়ে তুলতে হবে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে তরুণ সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে। শুধু প্রশাসন কিংবা বেসরকারি সংস্থা দিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা কঠিন বিষয়। সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রীরা বেশি বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে। সবার আগে প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে ছাত্রীদের সচেতন করতে হবে।
বাল্যবিবাহ মুচলেকা কিংবা জরিমানা করে বন্ধ করা সম্ভব না। বন্ধ করার পর অভিভাবকরা গোপনে অন্য স্থানে নিয়ে মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছেন। জনসচেতনতা ছাড়া বাল্যবিবাহ নির্মূল করা সম্ভব নয়।
প্রজেট্টো উত্তমো-ঋশিল্পী ইন্টারন্যাশনাল অনলুস-এর উদ্যোগে ‘আমার সোনার পরিবার’ এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সাতক্ষীরায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি অতিথিগণ এ মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে মোমবাতি প্রোজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন অতিথিগণ।
অনুষ্ঠানে প্রজেট্টো উত্তমো-ঋশিল্পী ইন্টারন্যাশনাল অনলুস-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বক্তারা আরও বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধের পর যাতে ১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে দিতে না পারে, এ জন্য তদারকিরও প্রয়োজন। অধিকাংশ ইউনিয়নে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে যে কমিটি রয়েছে, ওই কমিটিও গতিশীল নয়। মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের লোকবল খুবই কম। যানবাহন নেই। বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য নেই কোনো বরাদ্দ। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বাল্যবিবাহ বন্ধে সহযোগিতা করা তো দূরের কথা, তাঁরাও নানাভাবে বিয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গোপনে বা যেকোনো উপায়ে বিয়েগুলো আবার হয়ে যাচ্ছে। এখানেই নজরদারির বিষয়টি জরুরি। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার, বিশেষ করে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। বন্ধ করা বাল্যবিবাহের ঘটনা পুনরায় ঘটলে তার দায় নিতে হবে। আর স্থানীয় পর্যায়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কমিটিও আছে। কমিটিগুলোকে সক্রিয় করতে হবে। জাতীয় পর্যায়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা করে তা জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করার দাবি জানান বক্তারা।
প্রজেট্টো উত্তমো-ঋশিল্পী ইন্টারন্যাশনাল অনলুস-এর গ্রাজিয়েলা মেলানো (লাওরা) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রজেট্টো উত্তমো-ঋশিল্পী ইন্টারন্যাশনাল অনলুস-এর প্রতিষ্ঠাতা ভিনসেনজো ফালকোনে (এনসো), প্রেসিডেন্ট মিস. মনিকা তোশী, ইতালিয়ান অতিথি বন্ধু তেরেসা, ক্রিস্টিনা, কার্লা, লুক্রেসিয়া, মারিয়া, সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, কুশখালি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার, ধুলিহর-ব্রহ্মরাজপুর গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ এমাদুল ইসলাম, তালা উপজেলার সরুলিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম, কাশিপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক, সাংবাদিক আমিনা বিলকিস ময়না, ঋশিল্পী ইন্টারন্যাশনাল অনলুস-এর সেলিমুল ইসলাম, সরোজ কুমার বসু, আমিনুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন গৌতম মন্ডল ও জ্যোৎস্না আরা।
অনুষ্ঠানে ঋশিল্পীর সহযোগিতায় সাফল্য অর্জনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
এতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শপথ বাক্য পাঠ করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন