বাল্যবিয়ের আয়োজনের দায়ে কাজীসহ বরের চাচা ও কনের বাবা কারাগারে

মাদারীপুরে ইতালী প্রবাসী ছেলের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ১০ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাল্য বিয়ের আয়োজন করার দায়ে কাজীসহ বরের চাচা ও কনের বাবাকে এক মাস করে কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

৪ অক্টোবর বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার কুলপদ্বী এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার ভুমি ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কালকিনি উপজেলার ভাটাবালী গ্রামের মৃত সিদ্দিক হাওলাদারের ছেলে জয়নাল হাওলাদার (৪৫), মাদারীপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সৈয়দারবালী এলাকার মৃত ইউসুফ শেখের ছেলে মো. ওসমান শেখ (৪৪), কুলপদ্বী এলাকার মৃত আব্দুল খালেক কাজীর ছেলে ফারুক কাজী (৪৮)।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, বুধবার সকালে ১০ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে কাজী অফিসে বসে বিয়ে দেয়া হচ্ছে এমন খবরে নজরদারি রাখে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তারা। পরে কালকিনির ভাটাবালী গ্রামের নুরুল ইসলাম চৌকিদারের ছেলে ইতালী প্রবাসী রুবেল চৌকিদারের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিয়ের বিষয়টি হাতেনাতে ধরা পড়ে। তাৎক্ষনিক কাজীসহ বর ও কনের পরিবারের লোকজনকে আটক করেন কর্মকর্তারা। পরে খবর দেয়া হয় সদর উপজেলা প্রশাসনকে। একপর্যায়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ফারুক কাজী, বরের চাচা জয়নাল হাওলাদার ও কনের বাবা ওসমান শেখকে এক মাস করে কারাদন্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তাদের পাঠানো হয় কারাগারে। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে নিয়মিত এই অভিযান চলবে বলেও জানান ভ্রাম্যমাণ আদালত।

মাদারীপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার কনা জানান, পরিপূর্ণ বয়সের আগেই কোন বিয়ে নয়। সরকারের এই পদক্ষেপ পালনে কঠোর অবস্থানে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও প্রশাসন। এই কাজ যারা করবে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলাকে বাল্য বিবাহমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে কোথায়ও বাল্য বিয়ের আয়োজন করা হলে কঠোরভাবে তা প্রতিরোধ করা হবে।

আয়োজক, কাজীসহ সবাইকে আইনের আওতায় আসতে হবে। প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাদারীপুর সদর উপজেলাকে বাল্য বিবাহমুক্ত ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। গত দেড় বছরে এই উপজেলায় ৭৩টি বাল্য বিয়ে বন্ধ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।