বাহুবলে এমপি কেয়া চৌধুরীর ওপর যুবলীগ নেতার হামলা

হবিগঞ্জের বাহুবলে সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার মিরপুরস্থ বেঁদে পল্লীতে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পরপরই সংসদ সদস্য কেয়া চৌধুরীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। রাতে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার উপজেলা সমাজসেবার পক্ষ থেকে বেঁদে পল্লীতে ২১টি পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জ ও সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। তার প্রচেষ্টায়ই এ অর্থ সহায়তার বরাদ্দ দেয়া হয়। শুক্রবার বিকেলে মিরপুরস্থ বেঁদে পল্লীতে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে যান তিনি। এ উপলক্ষে বেঁদে পল্লীর পার্শ্ববর্তী স্থানে সমাবেশের মঞ্চ তৈরি করা হয়।

এক পর্যায়ে যুবলীগ নেতা নবনির্বাচিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. তারা মিয়া ও আওয়ামী লীগ নেতা আলাউর রহমান সাহেদের নেতৃত্বে কিছু লোক মঞ্চ থেকে মাইক খোলে নিয়ে যায়। এ নিয়ে হট্টগোল বাঁধলে তারা মিয়া ও সাহেদের পক্ষের কর্মীরা হামলা চালায়।

এতে কেয়া চৌধুরী ওই স্থানে সমাবেশ করতে না পেরে নিকটস্থ মিরপুর চৌমুহনীতে এসে রাস্তায় বসে প্রতিবাদ জানান। আধা ঘণ্টারও বেশি সময় রাস্তায় অবস্থানের পর চৌমুহনীতে শতশত লোকের সমাগম ঘটে। এক পর্যায়ে কেয়া চৌধুরী মাইক চাইলে তাকে মাইক এনে দেয়া হয়। তাৎক্ষণিক সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে কেয়া চৌধুরী ছাড়াও বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসকার আলী, লামাতাসী ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান চৌধুরী টেনু, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ তালুকদার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডা. আবুল হোসেন, মিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা কদর আলী, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক অলিউর রহমান অলি, উপজেলা মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাহেলা আক্তার প্রমুখ।

সমাবেশে কেয়া চৌধুরী এমপি হামলাকারীদের নাম-পরিচয় উল্লেখ করে বলেন, আমি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহার নিয়ে সুবিধা বঞ্চিত বেঁদে সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে এসেছিলাম। চিহ্নিত অপরাধী তারা মিয়া ও সাহেদের নেতৃত্বে উশৃঙ্খল কর্মীরা আমার ওপর হামলা করেছে।

তিনি জনগণের কাছে ঘটনার বিচার দিয়ে বলেন, আপনারাই বলুন আমার কি অপরাধ। কেন এরা আমাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে বাধা দিচ্ছে।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্যের এক পর্যায়ে কেয়া চৌধুরী এমপি মাথা ঘুরে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাকে গাড়িতে তোলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বাবুল কুমার দাশ বলেন, কেয়া চৌধুরী এমপি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তার শারীরিক অবস্থায় বিবেচনায় উন্নত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে কেয়া চৌধুরীর ওপর হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বাহুবল বাজারে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল করেছে স্থানীয় নেতাকর্মীরা।