‘বিএনপির টপ টু বটম সবাই দুর্নীতিবাজ’ : ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির ‘টপ টু বটম’ সবাই দুর্নীতিবাজ। এই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘টপ টু বটম’ দুর্নীতির বরপুত্র। তাকে ভালো মানুষ সাজানোর জন্য মির্জা ফখরুল একটা বিবৃতি দিয়ে বসলেন। আসলে দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে।’

শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে এই বর্ণচোরারা দেশের গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও স্বাধীনতার আদর্শ মানে না। এরা গণতন্ত্রকে গিলে খেয়ে লুটপাটের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে উদ্ধার করেছেন। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা, অর্থনীতির অগ্রযাত্রা, মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা-চেতনা বিকাশের অগ্রযাত্রার সাফল্য ফিরিয়ে এনেছেন। ১৫ আগে বাংলাদেশ কেমন ছিল? বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন ছিল? আর ১৫ বছর পরের বাংলাদেশ কেমন হয়েছে? আমাদের ভুলত্রুটি আছে এটা আমরা স্বীকার করি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অতীতের ভুলত্রুটি থেকে আমরা শিক্ষা নেব।

বিএনপির শাসনামলের দিকে ইঙ্গিত করে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, দুর্নীতিবাজ বেনজীরের জায়গায় কোহিনূর, আশরাফুল হুদা- এইসব লোককে আইজিপি বানানো হয়েছিল। এদের দুর্নীতির গল্প শুনলে শিউরে উঠতে হয়। বিচার কি হয়েছে? বিএনপির নেতারা জনে জনে দুর্নীতি করেছিল, লুটপাট করেছিল। তার বিচার কি হয়েছিল? বিএনপি কি তাদের কোনো নেতার বিচার করার সৎ সাহস দেখাতে পেরেছে? কিন্তু এটা করিয়ে দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, আফজাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

পরাধীন ফখরুল সাহেব তারেকের ধমকে অনেক কিছুই করেন: কাদের

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার রাজনৈতিক জীবনে স্বাধীন নন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুক্রবার গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এখন দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি টপ টু বটম একটি দুর্নীতিবাজ দল। এই দলের নেতা টপ টু বটম দুর্নীতির বরপুত্র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাকে ভালো মানুষ সাজানোর জন্য ফখরুল (বিএনপি মহাসচিব) একটি বিবৃতি দিয়ে বসলেন।

‘ফখরুল সাহেব তার ধমকে অনেক কিছুই করেন। তিনি তাদের নির্বাচিত ছয়জনকে সংসদে পাঠালেন। এখন ফখরুল যদি সংসদে যান, তারেক রহমানের পাওয়ার সংকুচিত হয়—এ রকম একটি সাইকোলজি থেকে ফখরুলকে পার্লামেন্টে যাওয়া থেকে বিরত রেখেছে তারেক রহমানের একটা ধমক,’ বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ফখরুল সাহেব নিজেই তো স্বাধীন নন। তার দলের কোনো পর্যায়ে কোনো সম্মেলন হয় না। অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা হয় না। তারেক রহমান বিদেশে থাকলে বিএনপি কখনো স্বাধীন সত্তা নিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটাতে পারবে সেটা আমাদের বিশ্বাস হয় না।

‘নির্বাচনে বিএনপি আসবে না। বিএনপি যদি নির্বাচনে আসতো, গতবারের মতো খরার ফলাফল হতো না। এটা আমি মনে করি, কারণ সার্বিক পরিস্থিতির কারণে অপজিশনের একটি ভোট ছিল কিন্তু তারেক রহমান মনে করেন, এই অবস্থায় যদি বিএনপি ভালোও করে সুফল তো আমি পাচ্ছি না,’ যোগ করেন তিনি।

তারেক রহমানের রাজনীতির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘তার অনুপস্থিতিতে অন্য কেউ নেতা হবে; ফখরুল সাহেব বোধ হয় নিজেও অনুধাবন করতে পারছেন যে, তাকে কীভাবে তারেকের ধমকের মুখে চলতে হয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাকে ভালো মানুষ সাজানোর তো কোনো কারণ নেই! বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র থেকে হঠাৎ করে সাত ধারাটা কলমের খোঁচায় বাদ দিয়ে দিয়েছে। কারণ ওই সাত ধারায় আছে, দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবে না। ফখরুল সাহেব ভালো মানুষে সাজাচ্ছেন, তাহলে সাত ধারা বাদ দিলেন কেন?’

বিএনপি গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাদ দিয়েছে কেন, জানালেন কাদের

বিএনপি তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারাটি বাদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি কেন ৭ ধারাটি তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে বাদ দিয়েছে, তার কারণও বলেছেন তিনি।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ প্রশ্ন তুলেন।

২০১৮ সালে দলের গঠনতন্ত্রে সংশোধন আনে বিএনপি। তাতে দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে ৭ নাম্বার ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে। দল ভাঙার চেষ্টায় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে পারে এই আশঙ্কায় ধারাটি বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানায় বিএনপি। সংশোধিত গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনেও (ইসি) জমা দিয়েছে দলটি।

এ প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাদ দিয়েছে। কারণ কী? কারণ ওই ৭ ধারায় বলা আছে কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবে না। এই ধারায় তারেক রহমান দোষী হয়ে যাচ্ছে। তাই তারেকের নির্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম কলমের খোঁচায় এই ধারা বাদ দিয়েছেন।