বিএনপি এলে পরিস্থিতি কী হবে একবার ভেবে দেখেছেন?
বিএনপি ক্ষমতায় এলে আবার ২১ আগস্টের মতো হামলা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের পরিস্থিতি কী হবে, সেটা একবার ভেবে দেখেছেন? আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ না হলে ২০০১ সালের চেয়ে পরিস্থিতি ভয়ংকর হবে। তাই নেতা-কর্মীদের দূরত্ব ঘুচিয়ে আনতে হবে।
রোববার চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক দিকনির্দেশনা দিয়ে এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুই বছর। আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন। মনে আছে ২০০১ সাল? বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের পরিস্থিতি কী হবে, সেটা একবার ভেবে দেখেছেন? তিনি বলেন, ২০০১ সালের পর পাঁচ বছর বাংলাদেশে ছিল অমানিশার অন্ধকার। বিএনপি ক্ষমতায় এলে সেই অমানিশার অন্ধকারে ফিরে যাবে দেশ। আবারও ২১ আগস্টের মতো ঘটনা ঘটবে। আবারও ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর রক্ত ঝরবে, খুন-লুণ্ঠন হবে। নারকীয় নৈরাজ্য ফিরে আসবে দেশে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘সময় এখনো আছে, ঐক্যবদ্ধ হন। বিএনপি আমলের সেই দুঃসহ স্মৃতি যদি মনে থাকে, তাহলে অনৈক্য করবেন না, কলহ করবেন না। বিভক্তির রাজনীতি ছেড়ে দিন। ঘরের মধ্যে ঘর করবেন না। মশারির মধ্যে মশারি খাটাবেন না। এ কাজটা করলে ক্ষতি আমাদেরই হবে।’
বিদেশে বসে হাসিনাকে সরানোর চক্রান্ত সফল হবে না
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির এখন প্রধান শত্রু আওয়ামী লীগ নয়। তাদের টার্গেট শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে হটাতে পারলেই বিএনপির শান্তি। বারবার তাকে হত্যার চক্রান্ত হয়েছে। এখনো চক্রান্ত চলছে। কিন্তু আমাদের শক্তির উৎস জনগণ। বিদেশে বসে হাসিনাকে এবং আওয়ামী লীগকে সরানোর চক্রান্ত সফল হবে না।’
চট্টগ্রামে সদস্য সংগ্রহের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দল ভারী করার জন্য খারাপ লোকদের আওয়ামী লীগের সদস্য করার প্রয়োজন নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী লোকদের সদস্য করে দলে কলহ বাড়াবেন না। সামনে নির্বাচন। আমি একটা কথা বলে যেতে চাই নেত্রীর পক্ষ থেকে। আগামী নির্বাচনের এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করুন। নির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি এখন থেকেই করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘১০ বছর আগে আজকের (১৬ জুলাই) এই দিনে শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু কোনো এমপি (সাংসদ) দিনটি মনে রাখেননি। আওয়ামী লীগ করলে ইতিহাস জানতে হবে। কখন কী ঘটেছে তা মনে রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কঠিন অবস্থায় নেতারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। কিন্তু তৃণমূলে ঐক্যবদ্ধ ছিল। আমাদের মধ্যে সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে। কারণ, খালেদা জিয়া দুই মাসের জন্য লন্ডনে গেছেন। আবার কী ষড়যন্ত্র হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া কেবি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় দুই সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক ও মহিবুল হাসান চৌধুরী, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, দক্ষিণ চট্টগ্রামের চার সাংসদ—শামসুল হক চৌধুরী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর চৌধুরী এবং আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
প্রতিনিধি সভায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পৌরসভা এবং উপজেলার ২ হাজার ২০০ প্রতিনিধি অংশ নেন। কিন্তু যাঁদের নিয়ে এই প্রতিনিধি সভা, তাঁদের কেউ বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি। এ জন্য ওবায়দুল কাদের ও মাহবুব উল আলম হানিফ এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। আগামী সেপ্টেম্বরে তৃণমূল পর্যায়ের এ নেতাদের নিয়ে আবার বর্ধিত সভা করার পরামর্শ দেন এই দুই নেতা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন