বিএনপি-জামায়াতের আরও ১৫৪ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি সামনে রেখে দেশজুড়ে দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার রাত পর্যন্ত ঢাকায় ২১ জন ও আরও ১৫ জেলায় ১৩৩ জনকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থক। কয়েকজন জামায়াত-শিবিরের।
এ নিয়ে গত ছয় দিনে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ৬৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। পুলিশের ভাষ্যমতে, সরকার উৎখাত ও নাশকতার মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনার অভিযোগে এবং বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি হিসেবে তাঁদের ধরা হয়েছে। তবে বিএনপি-জামায়াতের নেতারা অভিযোগ করেছেন, হয়রানি ও গ্রেপ্তার-বাণিজ্য করতেই এমন ধরপাকড় চালানো হচ্ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ২১ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানা গেছে। তবে কোন থানায় কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার বিস্তারিত জানা যায়নি। ঢাকার ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নে শনিবার রাতে বিএনপির এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভার মেয়র দেওয়ান আবুল বাশারসহ বিএনপির ১৯ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে রূপগঞ্জ, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ একই রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা করেছে। মামলায় সোনারগাঁ পৌরসভার প্যানেল মেয়র নাসিম পাশা ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সালাউদ্দিনসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজশাহী নগরে শনিবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত ৩৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ বলেছে, তাঁদের মধ্যে ১৭ জন মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি। সাতজনকে মাদকদ্রব্য বহন ও ১৩ জনকে অন্যান্য অপরাধে আটক করা হয়।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় শনিবার রাতে শিবিরের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। কুমিল্লার দেবীদ্বারের রাজামেহার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রউফ খান, এলাহাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কৌশিক আহম্মদ ও গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবদলের নেতা আশিকুর রহমানকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
বরিশালের গৌরনদী যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মনির হোসেন হাওলাদারকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উজিরপুরে বিএনপি-জামায়াতের চার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মজিদকে গতকাল রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নোয়াখালীতে শনিবার রাতে বিএনপির ছয়, ফেনীতে ২০, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা জামায়াতের আমির নুর উদ্দীন মাহমুদকে গতকাল সন্ধ্যায়, পাবনায় শনিবার রাতে জামায়াত-শিবিবের ১৩ জন, বরগুনায় শিবিরের তিন ও সিরাজগঞ্জে যুবদল-ছাত্রদলের তিনজন এবং নড়াইলে জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. জুলফিকার আলী মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বগুড়ার আদমদীঘিতে শনিবার বিকেলে বিএনপির ১২ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে মোট ৪২ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজনকে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন