বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ভারতীয় কর্মকর্তারা
ঢাকায় এ বছর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো অংশ নেবেন ভারতের সামরিক বাহিনীর কর্মরত (সার্ভিং) কর্মকর্তারা। বরাবরই বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতও ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তবে এর আগে ঢাকায় ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সার্ভিং অফিসারদের কেউ যোগদান করেননি।
এ বিষয়ে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের এমজিজিএস মেজর জেনারেল আর নাগারাজু বলেন, ‘ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে ৩০ জন কর্মকর্তা এবার বাংলাদেশে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাচ্ছেন। এর মধ্যে অন্তত চারজন সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত। প্রতিনিধি দলের বাকিরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া মিত্রবাহিনীর সদস্য।’
কিছুদিন আগে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে যে বিশেষ অনুষ্ঠান হয়েছিল, তাতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের বর্তমান প্রতিরক্ষা সচিব সঞ্জয় মিত্র, যিনি নিজেও একজন বাঙালি।
মেজর জেনারেল নাগারাজু জানান, গত ৯ ডিসেম্বর দেরাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে যে পাসিং আউট প্যারেড হলো, তাতে প্রথমবারের মতো প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক। তার মতে, দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যে এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এসব ঘটনাই তার প্রমাণ।
ভারত ও বাংলাদেশ
অবশ্য ভারতের সামরিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, গত বছরের শেষদিকে চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশ তাদের নৌবাহিনীর জন্য দুটি সাবমেরিন কেনার পর থেকেই পরিস্থিতি এভাবে পাল্টাতে শুরু করে।
এ বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দু’দেশের মধ্যে একটি সামরিক প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। তারপর থেকে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার পরিসর অনেক বেড়েছে। যৌথ সামরিক মহড়াও হচ্ছে ঘন ঘন। তবু বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ভারতের সার্ভিং অফিসারদের যোগদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাদের কাছে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারদের আত্মসমর্পণ উদযাপন করা হবে যে অনুষ্ঠানে, সেখানে ভারতের কর্মরত সেনা অফিসারদের পাঠিয়ে ভারতও বাংলাদেশকে আলাদা একটা বার্তা দিতে চাইছে, তাতে সন্দেহ নেই।
শুধু তা-ই নয়, দিনটি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকেও বড় এক প্রতিনিধি দল বুধবার ভারতে পৌঁছেছে। ৭২ সদস্যের এই প্রতিনিধিদলে অন্তত ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধাও আছেন। বেশ কয়েকজন এমপি ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও আছেন। ভারতে দিবসটি উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালা বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে। চলবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
কলকাতায় বুধবার গঙ্গাতীরের প্রিন্সেপ ঘাটে এই উপলক্ষে আয়োজিত একটি মিলিটারি ব্যান্ড কনসার্টে এই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ছিল মিলিটারি ট্যাটু বা ঘোড়সওয়ার সেনাদের কসরত প্রদর্শন। সেনাবাহিনীর এসব অনুষ্ঠান সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন