বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘মৃত্যু কূপ’ ওমান উপসাগরে
ওমান উপসাগরে বিশাল ‘মৃত্যু কূপের’ সন্ধান পেয়েছেন গবেষকেরা। যার আয়তন স্কটল্যান্ডের চেয়েও বেশি! গবেষকদের দাবি, এটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘মৃত্যু কূপ’।
গবেষকেরা বলছেন, ওমান উপসাগরের ওই বিশাল জায়গায় কোনো প্রাণী টিকতে পারছে না। আরব সাগরের অংশ ওই জায়গাটি আগে অপেক্ষাকৃত ছোট থাকলেও ধীরে ধীরে বিস্তৃত হচ্ছে। লন্ডনের ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউইএ) গবেষকদের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। তাঁদের গবেষণায় সহযোগিতা করে ওমানের সুলতান কাবুস বিশ্ববিদ্যালয়। জলদস্যু ও সাগরের ওই অংশের মালিকানা নিয়ে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর দ্বন্দ্ব থাকায় এত দিন ওই এলাকা নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি।
এনডিটিভি জানায়, গবেষকেরা শুক্রবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ওমান উপসাগরের প্রায় অক্সিজেন শূন্য ওই এলাকাটি স্কটল্যান্ডের চেয়ে বড়; অর্থাৎ ওই এলাকার আয়তন ৭৮ হাজার বর্গকিলোমিটারের চেয়েও বেশি! যা দিন দিন আরও বাড়ছে। গবেষকেরা ওই অঞ্চলে রোবট পাঠিয়ে দেখেন, সেখানে অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম। এ কারণে কোনো মাছ তথা প্রাণীকুল সেখানে টিকতে পারছে না।
গবেষকেরা ওই অঞ্চলের তথ্য সংগ্রহে সিগ্লাইডার্স নামের রোবট ব্যবহার করেছে। এই রোবট পানিতে এক হাজার মিটার গভীর পর্যন্ত যেতে পারে। এই রোবটে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার থাকে। যা তথ্য বিশ্লেষণে বেশ দক্ষ। গবেষকেরা বলছেন, ‘মৃত্যু কূপে’ এমনও জায়গা আছে যেখানে রোবট তেমন কোনো অক্সিজেনই পায়নি।
গবেষকেরা বলছেন, ‘পরিবেশগত এই বিপর্যয় শুধুমাত্র সেখানকার সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্যই হুমকি নয়। সেখানকার সমুদ্রের ওপর জীবন-জীবিকার জন্য নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর জন্যও হুমকি।’ আর গবেষকেরা যেমনটা ভেবেছিলেন, ওই এলাকার পরিবেশ বিপর্যয়ের মাত্রা তার চেয়েও মারাত্মক।
গবেষক দলের প্রধান ইউইএর স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের শিক্ষক বাসতিন কুইস্ট বলেন, ‘ওমান উপসাগরের এই এলাকাটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মৃত্যু কূপ। এর জন্য দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন। বিশ্বের যে কোনো সাগরে ২০০ থেকে ৮০০ মিটার গভীরতায় অক্সিজেন কম থাকে। কিন্তু মৃত্যু কূপে পানির এই গভীরতায় অক্সিজেনের পরিমাণ আরও কম।’ কুইস্ট বলেন, মাছ, সামুদ্রিক উদ্ভিদ বা যে কোনো প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন। এই অক্সিজেনের অভাবে ওই এলাকায় সেগুলো বাঁচতে পারছে না। এটা ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়, যার পরিণাম মানুষকেও ভোগ করতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন