বিসিক ভবনে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন করলেন শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি আজ দুপুরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এর প্রধান কার্যালয়ে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর উদ্বোধন করেছেন। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় বিসিক ভবনে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং বিসিক চেয়ারম্যান মুহ: মাহবুবর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশের সব স্তরের সরকারি প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও আদর্শ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জানানোর জন্যই এ উদ্যোগ নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর/সংস্থা।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর আদর্শ, জীবনাচার, রাজনৈতিক দর্শন, নেতৃত্বগুণ, দেশপ্রেমসহ সার্বিক কর্মকাণ্ড এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার সুযোগ সৃষ্টির জন্য বিসিকের উদ্যোগে “বঙ্গবন্ধু কর্নার” স্থাপন করা হয়েছে। এ কর্নারের উদ্দেশ্য হলো সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণ, তাঁদের নৈতিকতা ও মননশীলতার উন্নয়ন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত করা।
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এ দুটি নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশকে জানতে হলে আমাদের অবশ্যই বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর দৃঢ় নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি, লাল-সবুজের পতাকা পেয়েছি। এ “বঙ্গবন্ধু কর্নার” এর মাধ্যমে বিসিকের ১ হাজার ৭০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং বিসিকের সাথে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সোনার বাংলা বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
উল্লেখ্য, বিসিক ভবনে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’-এ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘জনকের ডাকে জাতির মুক্তি’ শিরোনামে শিল্পকর্ম করা হয়েছে। বিভিন্ন আলোকচিত্রে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে মৃত্যু, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ও ব্যক্তি জীবন, রাষ্ট্র পরিচালনা সব পর্যায়ের ফটোবায়োগ্রাফি দিয়ে কেন্দ্রটি সাজানো হয়েছে।
এছাড়া সাল অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর জীবন বৃত্তান্ত ছবির সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া স্থান পেয়েছে স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন দুর্লভ দলিল, দেশি-বিদেশি পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধ সময়কার প্রকাশিত সংবাদের ছবি ও আলোক চিত্র। আরও রয়েছে বঙ্গবন্ধুর হাতে লেখা বেশ কিছু চিঠি, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বিভিন্ন বই। পরে শিল্পমন্ত্রী বিসিক কর্মকর্তা সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের নবনির্বাচিত প্রতিনিধিবৃন্দের অভিষেক ও শপথ গ্রহণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। বিসিক কর্মকর্তা সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি অখিল রঞ্জন তরফদার এবং মহাসচিব জিএম রব্বানি তালুকদারসহ অন্যান্য প্রতিনিধিবৃন্দকে শপথ বাক্য পাঠ করান বিসিক চেয়ারম্যান মুহ: মাহবুবর রহমান।
‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন ও বিসিক কর্মকর্তা সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি বলেন, মধ্যম আয়ের বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছাতে হলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কাজে লাগাতে হবে, বেকার সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং সামাজিক বৈষম্য দূর করতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে দেশের শিল্প খাতের সম্প্রসারণের মাধ্যমে একটি শিল্পোন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিল্পোন্নত দেশ গড়ার লক্ষেই বঙ্গবন্ধু ১৯৫৭ সালে ইপসিক অর্থাৎ আজকের বিসিকের গোড়াপত্তন করেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এই বিসিক তাঁর চেতনাকে লালন করে সারা দেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। দেশ ও জাতির জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে অবদান বিসিকের “বঙ্গবন্ধু কর্নার” এর মাধ্যমে তা দেশের মানুষ ভালোভাবে জানতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি আরও বলেন, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি থাকবে, এদেশের জনগণ থাকবে, ততদিনই বঙ্গবন্ধু সকলের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।
নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের মুক্তির আলোকবর্তিকা হয়ে তিনি বিশ্বকে করেছেন আলোকময়। তাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধুর নীতি, আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বেড়ে উঠতে পারে সে লক্ষ্যে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।
এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্পসচিব বলেন, বিসিক ভবনে স্থায়ী “বঙ্গবন্ধু কর্নার” স্থাপন করায় আমি বিসিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই বাংলাদেশের মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এই দেশকে আমরা গড়ে তুলবো বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।
এ “বঙ্গবন্ধু কর্নার” এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আর্দেশকে প্রজম্ম থেকে প্রজম্মে সঞ্চালিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আর্দেশে উজ্জীবিত হয়ে দেশে শিল্পায়ন করতে হবে। দেশে ব্যাপক কর্মস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে, বেকারত্ব দূর করতে হবে। তাহলে অচিরেই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ উপহার দেয়া সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন