বেনজীরের সাভানা ইকো পার্কে এখন সুনসান নীরবতা!

বহুল আলোচিত ও সমালোচিত সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহম্মেদের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক ও তার আশপাশে দখল নেয়া জমি আয়ত্তে নিয়েছে গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসন।

আদালতের নির্দেশে সম্পত্তি ক্রোক আদেশ বাস্তবায়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পার্কটি নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়।
এরপরই এ খবরে এখন পার্কে কেবলই সুনসান নীরাবতা।

পার্কটি বন্ধ থাকায় ফিরে যাচ্ছেন ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরাও।

দুর্নীতি দমন কমিশন মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আতিকুর রহমান, দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মিজ বাবলী শবনমসহ অনেকেই শনিবার (৮ জুন) দুপুরে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহম্মেদের পার্কে যান। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ দিকে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে খুশি হলেও নিজেদের জমি ফেরতের দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের।

জানা যায়, পুলিশের আইজিপি থাকার সময়ে গোপালগঞ্জ সদর ও মাদারীপুরের রাজৈরে কয়েকশ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখলে নেন বেনজীর আহম্মেদ। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দর্শনার্থীদের পদচারণায় দিনের বেশিরভাগ সময় যেখানে মুখরিত থাকতো এই বিনোদন কেন্দ্রটি। সেটি এখন কেবলই সুনসান নীরবতা।
আদালতের পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া গেলে এটির কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে এর আগে মাইকিং করে পার্কটি নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ঘোষণা দেয় প্রশাসন।

এ দিকে পার্কের ভেতর থাকা পুকুরের ৫৯০ কেজি মাছ গোপনে বিক্রির দায়ে শফিকুল ইসলাম নামে একজনের নামে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেছে দুদকের কর্মকর্তারা।

এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা বাদল বলেন, সরকার বেনজীর আহম্মেদের সব সম্পত্তি ক্রোক করেছে। এটা খুশি খবর হলেও আমাদের এখনো কোনো লাভ হয়নি। আমাদের মনে শান্তি নেই। আমরা আমাদের ফসলি জমি ফেরত চাই। আবারো চাষাবাদ করে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।

দুর্নীতি দমন কমিশন মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আতিকুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশে পার্কটির বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়। সেখানে দুই জেলার বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, আমরা শুধু নির্দেশনা পালন করি। প্রধান কার্যালয়ের সচিব সাংবাদিকদের ব্রিফিং করবেন। আমরা মালামালের তালিকা প্রস্তুত করেছি। সেগুলো ক্রোক করা হবে। পরবর্তী ব্যবস্থা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নেয়া হবে।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, রাজৈর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে যতগুলো জমির মিউটেশন করা হয়েছে, সবগুলোই আমরা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে আয়ত্তে নিয়েছি। আদালতের আদেশে প্রশাসন সব বিষয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সাভানা পার্কটিতে একজন রিসিভার নিয়োগ দেয়া হবে। তিনি পুরো পার্কটি দেখভাল করবেন। এ ছাড়া বেনজীর আহম্মেদের সব জমি প্রশাসন এরইমধ্যে আয়ত্তে নিয়েছে। সেখানে জমির দাগ ও খতিয়ান উল্লেখ করে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দেয়া হচ্ছে।