বেরোবি উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে নীল দলের মানববন্ধন
এইচ. এম নুর আলম, বেরোবি প্রতিনিধি : রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববদ্যিালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ’র স্বেছাচারিতার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় মানববন্ধন করেছে মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর চেতনা, আদর্শ ও মূল্যবাধে উজ্জীবিত শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল।
আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ অভিযোগ জানানো হয়েছে। তবে উপাচার্য যে কোনো দাবি আদায়ে গণতান্ত্রিক পন্থায় কর্মসূচির ব্যাপারে জোর সমর্থন করেন বলে এক মুঠোফোনে আজ রাতে জানিয়েছেন।
নীল দলের সভাপতি ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শফিক আশরাফ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, ইতিহাস ও প্রততত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টম্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শাহীনুর রহমান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক এ টি এম জিন্নাতুল বাসার।
মানববন্ধনটি সঞ্চালনা করেন নীল দলের সাধারণ সম্পাক ও একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আপেল মাহমুদ।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘উপাচার্য কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে ব্যক্তিগত কাজে দিনের পর দিন বাইরে থাকা বন্ধ না করলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও আচার্য কর্তৃক তাকে দেওয়া নিয়াগপত্রের ১ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাস অবস্থান করবেন। তিনি রাষ্ট্রপতি ও আচার্য’র দেওয়া চিঠির নিয়োগ শর্ত লংঘন করে চলছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘উপাচার্য পদের চেয়ে তিনি অনারারি ক্যাপ্টেন পদের বেশি গুরুত্ব দেন। এর মধ্যে তিনি উপাচার্য পদের অমর্যাদা করেছেন। গোলাম রব্বানী তাঁর এহেন কাজের তীব্র নিন্দা জানান।
আপেল মাহমুদ বলেন, দায়িত্ব পালনের জন্য উপযুক্ত সংখ্যক যোগ্য শিক্ষক থাকা সত্বেও উপাচার্য একাই ১৩টি পদে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার কার্যক্রম ভীষণভাব ব্যহত হচ্ছে।
শাহীনুর রহমান বলেন, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল ব্যবহার করে নীতি বহির্ভূতভাব সম্ভাব্য মেয়র পদ প্রার্থীর জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি পদ বহির্ভূত অনেক বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়র অর্গানোগ্রাম লংঘন করেছেন।
এটিএম জিন্নাতুল বাসার বলেন, উপাচার্য অন্যায়ভাব ৫৪তম সিন্ডিকেট সভায় নয়জন শিক্ষককে আপগ্রেডেশন থেকে বঞ্চিত করেছেন এবং অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের স্থায়ীকরণের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না।
ড. শফিক আশরাফ বলেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদের জন্য যোগ্যতা অর্জনকারী চারজন প্রভাষকের মধ্য থেকে অন্যায়ভাবে রিপুল কবিরকে সাক্ষাৎকারের জন্য চিঠি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে তাকে সাক্ষাৎকারপত্র না দিলে বুধবার (আগামীকাল) উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
উল্লেখ্য, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রিপুল কবিরকে সাক্ষাৎকার পত্র না দেওয়ার ঘটনাকে অমানবিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে জঘন্যতম উল্লেখ করে নীল দলের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে উপাচাযর্কে আজ সকালে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ পত্র দেওয়া হয়েছে।
তবে উপাচার্য আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে এক মুঠোফোনে বলেন, ‘যে কেউ তাদের দাবি উথ্থাপনের জন্য গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ-মানববন্ধন-সমাবেশ করতে পারেন। এতে সবার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে। তিনি এসব অভিযোগের ভিত্তিতে বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজেই বাইরে যাই। ব্যক্তিগত কাজে যাইনা। ১৩ টি পদে থাকা নিয়ে তিনি বলেন, এর আগের উপাচার্য ২৮ টি পদে ছিলেন। যতদিন আমি উপযুক্ত মনে করবো ততদিন থাকবো।
তবে উপ-উপাচার্য, ট্রেজারপার পদে নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমার এখতিয়ারভুক্ত নয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যা করবেন তাই। মেয়র প্রার্থী রাশেক রহমানের নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে তিনি সরাসরি অস্বীকার করেন।
সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক রিপুল কবির এর সাক্ষাতের বিষয়ে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাঁকে আজ (মঙ্গলবার) চিঠি প্রদান করা হয়েছে। তাঁর সাক্ষাতকারের জন্য দুই মাস আগেই চিঠি প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠি দেওয়া না দেওয়া রেজিস্ট্রার দপ্তরের কাজ। আমার কাজ আমি করেছি।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন