বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির নীতিমালা চূড়ান্ত পর্যায়ে
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি জানান, এমপিওভুক্তির জন্য বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস রিক্রুটমেন্ট রুলস ১৯৮১ সংশোধন করা হচ্ছে।
এতে শতকরা ৫০ ভাগের স্থলে শতকরা ৮০ ভাগ সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সহকারী প্রধান শিক্ষক- শিক্ষিকা পদে পদোন্নতির সুযোগ পাবেন। সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
সরকারি দলের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী জানান, শিক্ষকদের শ্রেণি কার্যক্রমে আরো বেশি মনোযোগী করতে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। এতে তাদের আর্থিক সুবিধা ও সামাজিক মর্যদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জানান, বেসরকরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন শতকরা ১০০ ভাগ। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরও জুলাই ২০১৫ থেকে নতুন জাতীয় স্কেলে ২০১৫ অনুসারে বেতন দেওযার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। জুলাই ২০১৬ থেকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ৫০০ টাকার স্থলে এক হাজার টাকা হারে প্রদান করা হবে।
২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে এবতেদায়ি মাদ্রাসার ভাতার আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানে চারজন করে শিক্ষককে ৫০০ টাকার পরিবর্ততে এক হাজার টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি জানান, শিক্ষকদের পাঠদানে সৃজনশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে সৃজনশীল বিষয়ক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। বিগত দুই বছরে ৭৮ হাজার শিক্ষককে সৃজনশীল বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
সরকারি দলের সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রী জানান, পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস রোধে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এ কার্যক্রম অংশ হিসেবে পরীক্সারর্থীদের জন্য পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো প্রকার মোবাইল ফোন বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে সচিব ছাড়া অন্যান্য শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যাবহার কিংবা বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেন্দ্র সচিবও পরীক্ষা কেন্দ্রে স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। যে সব কেন্দ্রে এর ব্যত্যয় পাওয়া গেছে এবং যাবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, ২০১৭ সালে ঢাকা বোর্ডেও অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনেই ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহের সময় সঙ্গে মোবাইল ফোন রাখার দায়ে তিনজন শিক্ষককে পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাদরেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সদস্য এ কে এম মাঈদুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, কলেজ শিক্ষকরা প্রথম শ্রেণির ও গেজেটেড কর্মকর্তা, দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে গেজেটেড কর্মকর্তাদের দৈনন্দিন হাজিরা দেবার ব্যবস্থা নেই। তবে কলেজের শিক্ষকরা নিয়মিত কলেজে আসেন। শিক্ষকদের নিয়মিত হাজিরা নিশ্চিত করতে করতে দেশের কিছু সরকারি ও বেসরকারি কলেজে নিজস্ব অর্থায়নে কার্ড পাঞ্চিং চালু করেছে বলেও জানান তিনি।
জাসদের সদস্য বেগম লুৎফা তাহেরের প্রশ্নের জবাবে নূরুল ইসলাম নাহিদ জানান, কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে নারী শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার রোধে নানাবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কারিগরী শিক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্রী এনরোলমেন্টের হার ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ বছর পরিটকেনিকে ছাত্রীদের ভর্তির হার ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিপ্লোমা পর্যায়ে ছাত্রীদের জন্য ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে। সরকারি বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০১৮ সালে তিন লাখ ৮৭ হাজার ৭৬৪ জন, ২০১৯ সালে চার লাখ ৭৩ হাজার ৭২২ এবং ২০২০ সালে ছয় লাখ ৪৭ হাজার ছাত্রী ভর্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে ছাত্রীদের কারীগরি শিক্ষায় দক্ষ করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন