বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেরপুর জেলায় প্রথম শহীদ মাহবুব আলম

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেরপুর জেলায় প্রশাসনের গাড়ি চাপায় প্রথম শহীদ হয়েছেন মাহবুব আলম। তার বাড়ি শেরপুর জেলার চৈতনখিলা বটতলার এলাকায়। গত ৪ই আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রশাসনের গাড়ী চাপায় নিহত হয়।

তার জন্ম ১৯ই জানুয়ারী ২০০৫। শেরপুর শহরেই তার বেড়ে উঠা। পরিবারে দুইভাই তিন বোনের ভিতরে মাহবুব ছিলো ৪র্থ। পরিবারে মাহবুবকে নিয়ে স্বপ্নের কোন সীমা ছিল না। একসময় প্রতিষ্ঠ হয়ে হাল ধরবে পরিবারের। কিন্তু সবই এখন কল্পকাহিনী।

মাহবুব ছোট থেকেই ছিলো প্রখর মেধাবী আর প্রযুক্তির প্রতি তীব্র আকর্ষণ যা তাকে সাহায্য করে একজন সফল আইটি উদ্যোক্তা হতে। তাই তো মাধ্যমিকের কোনরকম গন্ডি পেরিয়ে
উচ্চমাধ্যমিকের গন্ডি না পেরুতেই প্রতিষ্ঠা করেন আই.টি ল্যাবের মতো কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার।

বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন মা গৃহিনী , কথা ছিলো দুই ভাই মিলে কঠোর পরিশ্রম করে বোনের লেখাপড়ার খরচসহ দূর করবেন পরিবারের আর্থিক সংকট অবস্থা যা আজ শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল। এমন কোন প্রতিভা নেই যা জানার বাকী ছিলো না মাহবুবের, ছিলো ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতার প্রথম হওয়া সহ, শেখ রাসেল প্রদর্শনি প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ স্থান পাওয়ার সনদ।

পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে তৈরী করেছিলেন একজন দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনার,ওয়েব ডেভেলপিং এর মতো কঠিন সব কার্মে।

ছিলেন আইসিটি ডিভিশন পরিচালিত “ হার পাওয়ার ” প্রকল্পের শেরপুর জেলার কো-অরডিনেটর। এখন তাকে হারিয়ে যেন পরিবারে যেন শোকের বন্যা বয়ছে।

তার ভাই মাজহারুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমার ভাই অত্যান্ত মেধাবী ছিলো। আজ আমি তাকে হারিয়ে নিঃস্ব। আমার কানের কাছে আর কখনোই মাহবুবের ম্যাসেঞ্জারে টুং টাং শব্দ শুনতে পারবো না, রাতের বেলা আর কখনো জিজ্ঞেসা করা হবে না ভাত খেয়েছে কি না।

আর কখনো বলা হবে না রাত অনেক হয়েছে এবার শুয়ে পর, হয়তো কখনো আর কোনদিন কলও করা হবে না। আমি চাই আমার ভাইয়ের হত্যাকান্ডে প্রশাসনের গাড়ী চালক সহ জড়িতদের সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের
আওতায় আনা হোক। সকলে আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন ”

তার মৃত্যুতে এলাকাবাসী, শিক্ষক ও সহপাঠী গভীর শোক প্রকাশ করেন।