বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরার শ্যামনগর কমিটি নিয়ে বিতর্ক: ৪৮ সদস্যের পদত্যাগ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শ্যামনগর উপজেলা কমিটি নিয়ে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির ৪৮ জন সদস্য একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

সংগঠনের সদ্য সাবেক সদস্যরা অভিযোগ করেন, সদ্য ঘোষিত কমিটিতে সীমাহীন স্বজনপ্রীতি ও অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব বাছাই করা হয়েছে। এছাড়া, মাঠপর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. মাসুম বিল্লাহ। তিনি জানান, গত ৭ এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলা কমিটির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে শ্যামনগর উপজেলা কমিটির ৭৬ সদস্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু কমিটি গঠনের পূর্বে কাউকে মতামত জানানোর প্রয়োজন মনে করা হয়নি। এতে দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের আদর্শে বিশ্বাস রেখে কাজ করে যাওয়া প্রকৃত ছাত্রনেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের বাদ দিয়ে সুবিধাভোগীদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। যারা কখনো আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নেননি, তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জি. এম মাসুম বিল্লাহ, বিল্লাল হোসেন, জাহিদ হাসান, আব্দুল্লাহ আল সিয়াম, মুনতাসির রহমান ও রোকনসহ অনেকে। তারা জানান, শুধুমাত্র পদত্যাগ করেই থেমে থাকবেন না, বরং সংগঠনের মূল আদর্শ রক্ষায় নতুনভাবে সংগঠিত হবেন।
তাদের ভাষায়, “বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র ঐক্য গঠনের যে চেতনায় এই সংগঠন গড়ে উঠেছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই চেতনারই অবক্ষয় ঘটানো হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কমিটির ৭৬ সদস্যের মধ্যে ৪৮ জন ইতোমধ্যে স্বাক্ষরসহ লিখিতভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র গণমাধ্যম ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় পর্যায়েও প্রেরণ করা হয়েছে।

পদত্যাগকারী সদস্যরা বলেন, তারা কোনো রাজনৈতিক দলের ছায়াতলে নয়, একটি বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যেতে চান। সেই বিশ্বাস থেকেই তারা একচেটিয়া ও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।