বোনের শ্বশুর বাড়ী থেকে চুয়াডাঙ্গার স্বপনের লাশ উদ্ধার
পরকীয়ার জের ধরে পিটিয়ে হাত—পা ভেঙে স্বপন আলী (২৭) নামে এক যুবককে হত্যা করেছে তাঁর চাচাতো বোনসহ শ্বশুর বাড়ীর লোকজন।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়ে ওই বাড়ীর সবাই পালিয়ে গেলেও চাচাতো বোন সুমিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিহত স্বপন চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানা এলাকার নেহালপুর ইউনিয়নের শ্রীকোল—বোয়ালিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জালাল মোড় এলাকায় বোনের শ্বশুর বাড়ীতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
পরে খবর পেয়ে আসাদের বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে অনড় স্থানীয়রা।
নিহতের বাবা আব্দুর রশিদ খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে তার ভাতিজি সুমি খাতুনের শ্বশুর বাড়ী গিয়ে স্বপনকে লাশ অবস্থায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে বার বার মুর্চা যাচ্ছিল।
সেসময় আব্দুর রশিদ জানান, তার ভাতিজির সঙ্গে তার ছেলে স্বপনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ভাতিজি তার ছেলেকে ফোন করে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে আসেন এবং বাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়েছেন। এ হত্যার ঘটনায় তিনি থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
স্বপন হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী কামালের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন জানান, ‘আমি মারধরের খবর শুনে সকাল আনুমানিক আটটার গিয়ে দেখি অনেক লোকজন। উঠানে শুয়ে পড়ে ওই ছেলে বারবার বাড়ির বউকে (স্বপনের চাচাতো বোন) ডেকে বলছে, “আমার পানি দে রে, আমার হাসপাতালে নিয়ে যা, আমি বাঁচে যাবনে।” এর ঘণ্টাখানেক পরে গিয়ে দেখি স্বপন মারা গেছে, সেসময় বাড়িতে সুমি খাতুন রান্না করছে।’
স্থানীয় কালু শেখ বলেন, রাতে বাঁশ দিয়ে মারধরের শব্দ ও চিৎকার—চেঁচামেচি শুনেছেন হত্যাকাণ্ডের বাড়িতে। সকালে এসে তিনি স্বপনের লাশ দেখতে পান।
এ বিষয়ে স্বপনের চাচাতো বোনের একটি ভিডিও বক্তব্য পাওয়া গেছে। ভিডিওতে তিনি বলেন, রাত দুইটার দিকে স্বপন তার শ্বশুরবাড়িতে এসে জানালা ধরে টানাটানি করছিলেন। সে সময় তার ভাশুরসহ স্থানীয় লোকজন স্বপনকে মারধর করে উঠানে ফেলে রেখে যান।
তিনি সকালে স্বপনের বাড়িতে খবর দিয়ে রান্নার নাটক করছিলেন। চাচাতো বোনের ভাষ্য, স্বপন তাকে পছন্দ করতেন। এ নিয়ে অতীতে অনেকবার সালিশ হয়েছে।
কুমারখালী পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুহিন শেখ বলেন, তিন—চার মাস আগেও ওই ছেলে একবার এই বাড়িতে এসেছিলেন। আমি সালিশ, করেছিলাম। গত রাতে আবারও এলে স্থানীয় বাসিন্দারা আমাকে জানিয়েছিলেন। সে সময় আমি ওই যুবককে মারধর করতে নিষেধ করে ৯৯৯ নম্বরে (জাতীয় জরুরি সেবা) কল করতে বলেছিলেন।
কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে জালাল মোড় এলাকার একটি বাড়ির উঠান থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত যুবকের মাথার চুল এবড়োখেবড়ো করে কাটা, শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও রক্ত রয়েছে।
ওসি বলেন, চাচাতো বোনের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। উঠানে লাশ ফেলে রেখে ওই বাড়ির সবাই পালিয়েছেন। তবে প্রধান অভিযুক্ত সুমিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন