ব্রেকআপের পর থেকেই প্রশ্নটা আমার কাছে নিষ্প্রয়োজন
ওপার বাংলার জনপ্রিয় নায়িকা শুভশ্রী গাঙ্গুলী, শুধু শুভশ্রী নামেই তিনি বেশি পরিচিত। এপার বাংলাতেও তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। আগামী রোববারই তিনি শুটিংয়ের কাজে লন্ডন যাচ্ছেন। সেখানে ব্যস্ত সময় কাটবে তার। লন্ডন যাওয়ার আগে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন কলকাতার পত্রিকা আনন্দবাজারের সঙ্গে। জীবনের নানা প্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সেখানে উঠে এসেছে রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে বিচ্ছেদের প্রসঙ্গও।
সাক্ষাৎকারটির চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকের জন্য।
প্র: এ বছর তো আপনার পরপর ছবি!
উ: হ্যাঁ, যদি ‘ধূমকেতু’ রিলিজ করে, তা হলে ছ’টা ছবি মুক্তি পাবে এ বছর। ‘আমার আপনজন’, ‘বস টু’, ‘নবাব’, ‘দেখ কেমন লাগে’, ‘চালবাজ’। ছবিগুলো মুক্তি পাচ্ছে খুব ইন্টারেস্টিং ভাবে। ‘আমার আপনজন’ কমার্শিয়াল ছবি, কিন্তু ভীষণ আরবান। যেখানে বিদেশে গিয়ে নাচগান বা আকাশে উড়ে গিয়ে ফাইট হয় না। ‘বস টু’ পুরোপুরি লার্জার দ্যান লাইফ। আবার ‘দেখ কেমন লাগে’ হলো রম-কম। সোহম আছে আমার বিপরীতে। দারুণ ইন্টারেস্টিং একটা গল্প।
প্র: ছবিতেও কি দর্শক শুভশ্রীর বিখ্যাত হাসি দেখতে পাবে?
উ: (প্রচণ্ড হাসতে-হাসতে) না-না, ‘গুঞ্জা’ (শুভশ্রীর চরিত্র) খুব কাম অ্যান্ড কমপোজড।
প্র: ‘নবাব’, ‘চালবাজ’ দুটোই তো বাংলাদেশি নায়ক শাকিব খানের বিপরীতে?
উ: হ্যাঁ। আর ঈদে কিন্তু আমার দুটো ছবি রিলিজ করছে, ‘বস টু’ আর ‘নবাব’ (শুধু বাংলাদেশে)।
প্র: এই ছবিগুলো কি বাংলাদেশি দর্শকের কথা ভেবে করছেন?
উ: (একটু ভেবে) না, আমার তো মনে হয়, শাকিবের এখানেও সফল হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। ছবির গল্পও ভাল। আর হ্যাঁ, বাংলাদেশে আমাদের বিরাট ফ্যান ফলোয়িং আছে। টলিউডের অভিনেতাদের অদ্ভুত ক্রেজ ওখানে।
প্র: আপনি তো স্করপিও। স্করপিয়ানরা কিন্তু খুব…
উ: (প্রশ্ন শেষ করার আগেই) খুব রিভেঞ্জফুল হয় তো? কিন্তু আমি একটুও নই। ভগবানকে আমি সম্পূর্ণ বিশ্বাস করি। মানুষ রিভে়ঞ্জ কখন নেয়, যখন কোনও কিছু তার মতো করে হল না। কিন্তু আমার ভাবনাটা অন্য। জীবন আমার মতো করে নাও চলতে পারে। ভগবানের উপর ছেড়ে দিই সব কিছু। আর একটা কথা বলি, স্করপিয়ানদের মতো গভীরতাও কিন্তু অন্য কারও মধ্যে থাকে না।
প্র: তাই কি বিচ্ছেদের পর রাজ চক্রবর্তীর প্রতি আপনার কোনও ক্ষোভ নেই?
উ: দেখুন, আমাকে দেখে এখন কেউ বলবে না যে, আমি একটা ব্রেকআপের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আসলে, কোনও খারাপ মুহূর্তের মধ্য দিয়ে গিয়েছি, এটাই মন থেকে মুছে ফেলতে চাই। তাই এই ব্যাপারটাকে এড়িয়ে গিয়েছি বা বলতে পারেন জীবন থেকে বাদ দিয়েছি। নেগেটিভ কোনও কিছু বা মনখারাপকে আঁকড়ে আমি বাঁচতে চাই না। আমি সব সময় হ্যাপি থাকতে ভালবাসি।
প্র: সেটা করা তো সহজ নয়!
উ: জীবনটা খুব ছোট। আমার চারপাশে যারা আছে, চাই তারা যেন আমার কাছ থেকে পজিটিভ ভাইবস পায়। সেখানে যদি আমি ব্রেকআপ নিয়ে মনখারাপ করে বসে থাকি, আমার নেগেটিভিটিটাই কিন্তু সবার কাছে পৌঁছবে। যেটা আমি চাই না।
প্র: রাজ সম্পর্কে কী বলবেন?
উ: আই রেসপেক্ট হিম। হি ইজ আ ভেরি নাইস হিউম্যান বিয়িং বললে কম বলা হয়, হি ইজ অ্যান অ্যামেজিং পার্সন। আমরা খুব পজিটিভ ভাবে আমাদের সম্পর্কটা শুরু করেছিলাম, পজিটিভ নোটেই সেটা শেষ করলাম।
প্র: আপনাদের ব্রেকআপের কারণটা কী?
উ: কেন সম্পর্কটা শেষ হল, কীসের জন্য, সেই প্রশ্নটা আমি নিজেকেই করতে চাই না। যে দিন ব্রেকআপ হয়েছিল, তার পর থেকে ওই প্রশ্নটা আমার কাছে নিষ্প্রয়োজন। আর রিলেশনশিপে ব্রেকআপ কি খুব অস্বাভাবিক? আমি শুধু রাজের সঙ্গে কাটানো সুন্দর মুহূর্তগুলোই মনে রাখতে চাই। আর যে খবরগুলো বাইরে রটেছে, ও আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে, আমি গায়ে আগুন দিয়েছি, এগুলো বাজে রটনা।
প্র: আপনি তো খুব ডেডিকেটেড প্রেমিকা। সে ক্ষেত্রে এই সম্পর্কটার গোড়াতেই কি গলদ ছিল?
উ: ভালবাসার ক্ষেত্রে জাজমেন্টাল হওয়া উচিত নয়। লাভ ইজ ব্লাইন্ড!
প্র: দেবের সঙ্গে ব্রেকআপ, তার পর রাজ। আপনার কি মনে হয় না, পার্সোনাল লাইফ কোথাও পিছু টানতে পারে কেরিয়ারকে?
উ: না, আমি অত স্ট্র্যাটেজিক্যালি ভেবে চলতে পারি না। ভালবেসেছি যখন, মন দিয়ে ভালবেসেছি। যে দিন সরে এসেছি, পুরোপুরি সরে এসেছি। তার পর যা হবে, ঈশ্বর জানেন।
প্র: এতটা মনের জোর কোথা থেকে পান?
উ: এটা না বলা সত্যিই খুব ডিফিকাল্ট। জীবনে ভাল সময় আসে, খারাপ সময় আসে। ওই ভাঙাচোরা রাস্তাগুলো পেরোনোর সময় কী ভাবে যে শক্তি পেয়ে যাই, তার উত্তর আমার কাছেও নেই। মনে হয়, ভগবান আর পরিবারের কাছ থেকে পাই, যারা সব সময় আমার পাশে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন