ভন্ড সাধুর কান্ড: জিন-পরীর ভয় দেখিয়ে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ
রাজবাড়ীর পাংশাতে জিনের সাহায্যে পুরো পরিবারকে ধনী বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে সবুর প্রামাণিক (৫৫) নামে এক ভণ্ড সাধুর বিরুদ্ধে নবম ও দশম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সবুর রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের প্রাণপুর গ্রামের মৃত ভোলা প্রামাণিকের ছেলে।
মঙ্গলবার রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নবম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা এবং দশম শ্রেণির ছাত্রীর বোন বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন।
আদালত রাজবাড়ীর পাংশা মডেল থানার ওসিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।
নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুলছাত্রী জানান, কথিত সাধু সবুর তাকেসহ তার পরিবারের সদস্যদের জিন ও পরীর ভয় দেখায়। এর অংশ হিসেবে গত মে মাসের শেষ দিকে একদিন রাতে সবুর তার বাবাকে বলেন, এক গ্লাস পানি নিয়ে তাকে (স্কুলছাত্রী) বাড়ির পাশে থাকা একটি তাল গাছের নিচে যেতে। সে সেখানে গেলে জোর করে হাত বেঁধে তাকে ধর্ষণ করে। স্কুলছাত্রী চিৎকার দিতে গেলে সবুর তাকে ভয় দেখিয়ে বলেন, জিন তার (স্কুলছাত্রী) বাবাকে মেরে ফেলবে এবং এ কথা কাউকে বললে তার পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে। তাকে টানা ৪১ দিন জিনের খায়েশ মেটাতে হবে। আর এ খায়েশ মেটালেই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়ে যাবে। এ সব কথা বলে তাকে দুইবার ধর্ষণ করে।
অপরদিকে, দশম শ্রেণির ছাত্রী বলেন, আমি বেশ কিছু দিন ধরে আমার বোনের বাড়িতে অবস্থান করছি। ওই বাড়িতে সবুর আসে। সবুর আমার বোন ও দুলাভাইকে বড়লোক করে দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। একই সঙ্গে আমাকে সবুর তার নিজ বাড়িতে কথিত জিনের আসন বসানোর কথা বলে। আর এই আসন না বসালে আমার বড় ক্ষতি হবে বলে ভয় দেখায়।
সে জানায়, গত মে মাসের শেষ দিকে একদিন রাতে সবুরের বাড়ির কথিত জিনের আসনে সে যায়। সবুর প্রথমে তাকে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে বলেন। সে নামাজ শেষ করতেই সবুর ঘরের আলো নিভিয়ে দেয়। এরপর ভণ্ড সবুর একটি কালো রঙের জুব্বা পড়ে তার (স্কুলছাত্রী) সামনে আসে এবং তার শরীরে হাত দেয়। এসময় বাধা দেওয়ায় সবুর তাকে বলে, ‘আমি এখন জিন সবুরের রূপে তোমার কাছে এসেছি, আমার খায়েশ মিটিয়ে দাও, তোমার মনের সকল আসা পূরণ হবে।’
সে (স্কুলছাত্রী রাজি না হলে সবুর জোর করে তাকে ওই নামাজের পাটির ওপর ফেলে ধর্ষণ করে। এরপর একই ধরণের ভয় দেখিয়ে তাকে চারবার ধর্ষণ করে।
পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন জানান, ওই সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দুপুরে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ঘটনার পর থেকেই ভণ্ড সাধু সবুর পলাতক বয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সৌজন্যে: কলেরকন্ঠ
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন