ভরা মৌসুমে কমছে না চালের দাম
আমনের ভরা মৌসুমেও কমছে না চালের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎপাদনের ক্ষতি কাটিয়ে না ওঠা এবং আমদানি খরচ বৃদ্ধির কারণে চালের দাম বাড়তি।
গত বছরের এই সময়ের তুলনায় সব ধরনের চালের দাম কেজিতে অন্তত ১২ টাকা বেশি। সরকারি সংস্থা টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) এই হিসাবের তুলনায় বাজার দর আরো কিছুটা চড়া। তাই চাল কিনতে গেলে মানুষের কষ্ট ও হতাশার কিছুটা বোঝা যায়। চালের বাজারে এ নিয়ে বিতর্কে জড়াচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতা।
এক ক্রেতা বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় চালের দাম বেশি। আমরা তো মধ্যবিত্ত মানুষ আমাদের মোটামুটি আল্লাহর রহমতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের চাইতেও যারা গরিব, তাদের জন্য তো কষ্টকর।’
আরেক ক্রেতা বলেন, ‘আমরা তো আশা করেছিলাম যে সিজন আইলে চালের দাম কমবে। তো এহুন কিছু কমছে। আগে ৬০ টাকা ছিল এহুন ৫০ টাকা, ৫৫ টাকা হইছে। বেশি তো মহামারী কমে নাই। বাড়ানোর কালে বাড়ছে বেশি। কমনের কালে কমছে কম।’
তৃতীয় আরেক ক্রেতা বলেন, ‘৫০ টাকার নিচে চালের দাম কমবে পারসোনালি এইটা আমি মনে করি না।’
বেশি দামে আনতে হচ্ছে বলেই, দাম-বেশি নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এ জন্য মিলমালিক ও পাইকারদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন খুচরা বিক্রেতারা।
এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘অগ্রহায়ণ সিজনে নাজিরশাইল, স্বর্ণা ও মোটা এগুলো চাল ওটে। পোলাওর চাল আতপ চাল টাইপের। এখন দাম কমার কথা ছিল, তবে সিজন ভালো যায় নাই। ফলনটাও খুব কম হয়েছে। এ জন্য দাম বেশি। আর মিলাররা কিছু ধান স্টকে রেখেছে। যা ধান উঠেছে, তা পুরা সিজন যাবে না। কিছু ধান ওরা আটকাইয়া রাখছে।’
পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে সম্প্রতি সব ধরনের চালের দাম আরেক দফা বেড়েছে। তাদের মতে, সামনে চালের দাম কমার তেমন কোনো আশা নেই।
এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, ‘২০ টনের পরিবর্তে আমরা এখন ১৪ টন আনতেছি। ৪০০ বস্তার পরিবর্তে আমরা এখন ২৮০ বস্তা আনতেছি। এটা একটা কস্টিংটা আমাদের বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। দেশে হাওর এলাকায় কিছু ফসল মার খেয়ে গেছে। সামনে হয়তো, আশা করি ইন্ডিয়া আমাদের সব সময় চাল দিয়ে রাখে, ধানের বাজার বাড়ার কোনো লক্ষণ দেখতেছি না।’
তবে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারি নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, চালের দাম বাড়ায় দেশের দরিদ্র মানুষদের কষ্ট হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম চালের দাম একটু বাড়ুক, যাতে কৃষক তার উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য পায়। কিন্তু এটা যে এত পরিমাণ বাড়বে তা আমাদের জানা ছিল না।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন