ভারতজুড়ে মুসলমানদের ওপর গেরুয়া সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ

ভারতজুড়ে মুসলমানদের ওপর উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের হামলা নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ করেছে ছাত্রজনতা।
শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আয়োজনে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ থেকে মুসলমানদের নির্যাতন নিপীড়ন থেকে রক্ষায় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর, ফিলিস্তিন ও আরাকানের স্বাধীনতার দাবি জানানো হয়।
এ সময় ‘ফ্রি ফ্রি, কাশ্মীর’, ‘ফ্রি ফ্রি, প্যালেস্টাইন’, ‘ফ্রি ফ্রি, আরাকান’, ‘বিশ্ববাসী এক হও, গাজা দখল রুখে দাও’, ‘দুনিয়ার মুসলিম এক হও, লড়াই করো’, ‘ইসরাইলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ভারতের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মিয়ানমারের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভে বক্তৃতা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ।
মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মুসলমান বসবাস করে। অথচ ভারত ফিলিস্তিনের মুসলমানদের গণহত্যায় ইসরাইলের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে। এরপর তারা মুসলমানদের ধর্মীয় সহায় সম্পত্তি কেড়ে নিতে ওয়াকফ বিলের নামে ষড়যন্ত্র করেছে। এর মধ্য দিয়ে গোটা ভারতে মুসলমানেরা ক্ষোভে ফুঁসছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকার মুসলমানদের ক্ষোভ প্রশমন করতে ব্যর্থ হয়ে কাশ্মীরের মতো কঠোর সেনা নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ২৭ জন পর্যটক হত্যা করে মুসলমানদের দোষারোপ করছে।
তিনি বলেন, ভারত সরকার পেহেলগামের ঘটনাকে পুঁজি করে মুসলমানদের আক্রমণের মুখে ঠেলে দিয়েছে। ফলে কাশ্মীরসহ সারা ভারতে মুসলমানেরা আজ গেরুয়া সন্ত্রাসীদের আক্রমণেরর শিকার হচ্ছে। এ সন্ত্রাস অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং হিন্দুত্ববাদীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এ সময় জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের এ সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত নারী কমিশনের প্রতিবেদনে ইসলাম বিরোধী সুপারিশের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ভারতের প্রকাশ্য দালাল পালালেও বর্ণচোরা দালালরা সক্রিয়। তারা এনজিও দালালদের সঙ্গে মিলে মোদী সরকারের মতো বাংলাদেশে মুসলমানদেরকে ইসলামী আইনের বদলে অভিন্ন পারিবারিক আইন চাপিয়ে দিতে চায়। এ অবস্থায় অবিলম্বে নারী কমিশন ভেঙে দিতে হবে।
সাইয়েদ কুতুব বলেন, যে মুসলমানরা যুদ্ধ করে ভারতকে বৃটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীন করেছেন সেই মুসলমানদের উপরই এখন ভারতের হিন্দুত্ববাদীরা গণহত্যা ও উচ্ছেদ চালাচ্ছে। আমরা ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই ভারতের মুসলমানদের মুছে দেওয়ার পরিকল্পনা কখনোই সফল হবে না।
তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিন যতদিন না স্বাধীন হবে আমাদের ভাইয়েদের লড়াই ততদিন পর্যন্ত চলতেই থাকবে। এ লড়াই শুধু ফিলিস্তিনের নয়, এ লড়াই প্রতিটি মুক্তিকামী মানুষের ও প্রতিটি মুসলমানের।
আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, আমরা দেখেছি দুইদিন আগে কাশ্মীরে জঙ্গি নাটক করে মোদি সরকার মুসলমানদেরকে গ্রেফতার করছে, এটি সুস্পষ্টভাবে জায়োনিস্ট ও হিন্দুত্ববাদের যৌথ পরিকল্পনা। আমরা সবাইকে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো: তোফায়েল আহমেদ; বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোঃ আরিফুল ইসলাম, ও শাকিল আহমেদ প্রমুখ।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন