ভারতীয় চোরাই গরু আনতে গিয়ে বৈদ্যুতিক ফাঁদে আটকে যুবকের মৃত্যু

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সীমান্ত অঞ্চল থেকে অবৈধভাবে গরু আনতে গিয়ে সোহাগ (১৮) নামের এক চোরাকারবারী নিহত হয়েছেন।

শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের গারো পাহাড় অধ্যুষিত বানাইচিরিঙ্গা পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবক হালুয়াঘাট উপজেলার ভূবনকুড়া ইউনিয়নের জামগড়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে।

স্থানীয় ও স্বজনরা জানায়, ওই এলাকার একটি সংঘবদ্ধ চক্র ভারত থেকে চোরাই পথে গরু আনতে নিহত সোহাগকে সাথে করে সীমান্তে নিয়ে যায় । গরু নিয়ে আসার পথে হঠাৎ চোরাই চক্র বিজিবি (বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড) টহল দলের সামনে পড়ে যায়। টহল দল দেখে পাচারকারীরা গরু রেখে পালিয়ে যায়। দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে নিহত সোহাগ বন্য হাতি তাড়ানোর বৈদ্যুতিক ফাঁদে আটকে যায়। পরে সীমান্তের কাছকাছি বসবাস করা স্থানীয় কয়েকজন মিলে বৈদ্যুতিক ফাঁদ থেকে তাকে উদ্ধার করে। আহতাবস্থায় সোহাগকে উদ্ধারের বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানায় উদ্ধারকারীরা।

খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন (৩৯) আওতাধীন তেলিখালী বিওপি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার জামাল উদ্দিন জানান, নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে টহল পরিচালনা করতে সীমান্তের কাছাকাছিতে অবস্থান নেয় বিজিবি সদস্যরা। এসময় বিজিবির অবস্থান বুঝতে পেরে পাচারকারীরা গরু রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে টহলরত বিজিবি সদস্যরা সেখান থেকে ফেলে যাওয়া দুটি ভারতীয় গরু উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসে।

এরপর মৃত্যুর সংবাদটি এলাকারবাসীর মাঝে ছড়িয়ে পড়লে ওই বিজিবি ক্যাম্পে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং বিজিবি সদস্যদের প্রতি চড়াও হয় স্থানীয়রা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাহাবুবুল হক জানান, এ ঘটনার খবর পেয়ে থানা পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় এবং নিহতের লাশ থানায় আনার ব্যবস্থা করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেকেই জানান, সীমান্তে চোরাকারবারিরা অবৈধভাবে প্রতিদিন অসংখ্য ভারতীয় গরু আমদানি করছে। আর এসব কাজে জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে অর্থের প্রলোভনে ব্যবহার করা হচ্ছে উঠতি বয়সী তরুণদের। রাত হলেই সোহাগের মতো অংসখ্য যুবককে শ্রমিক হিসেবে গরু আনার কাজে ব্যবহার করে থাকে চোরাকারবারিরা।