চুক্তি করতে লাগবে না মমতার
ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের রায়ে দূর হলো তিস্তা চুক্তির বাধা
দিল্লিতে ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের এক রায়ে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তি জানানোর বাধা আপাতত দূর হয়ে গেছে। শুক্রবার দেয়া রায়ে বলা হয়েছে, ‘নদী কারও একার নয়। কোনো রাজ্য নদীর পানির অধিকার একা নিতে পারে না।’
দক্ষিণ ভারতের কাবেরী নদীর পানিবণ্টন মামলার রায়ে এমনই রায় দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট। তাৎপর্যপূর্ণভাবে কাবেরী নদীর পানি নিয়ে রায় হলেও সুপ্রিমকোর্টের এই নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তিস্তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের আপত্তি অগ্রাহ্য করে এককভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই শক্তি জোগাল। স্বভাবতই জাতীয় নির্বাচনের বছরে ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের এই রায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য স্বস্তির বলে মনে করছেন দু’দেশের কূটনীতিকরা।
ভারতীয় সংবিধানের সূত্র ধরে মমতা ব্যানার্জিরা দাবি করছিলেন, ‘যুক্তরাজ্য কাঠামোয় কৃষকদের স্বার্থে তিস্তার পানি ইস্যুতে রাজ্যের অধিকার ও বক্তব্যই গুরুত্ব দিতে হবে। প্রথমে মনমোহন সিং ও পরে মোদি, দু’জনই সংবিধানের শর্ত মেনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার আপত্তিকে গুরুত্ব দিয়েই ইচ্ছা থাকলেও বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করতে পারছিলেন না। গত বছর দিল্লিতে শেখ হাসিনা এলে তাকেও তিস্তা নিয়ে আশা দিয়েছিলেন মোদি। কিন্তু মমতা বেঁকে বসায় সেই চুক্তি করার জন্য দিল্লি অনেকটাই এগিয়ে গেলেও চুক্তি সম্পন্ন করতে পারছে না। তবে শুক্রবার নদী নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের রায়ে প্রধানমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় সরকারের হাত আরও মজবুত হল। এদিন সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ বলেন, ‘নদী কোনো নির্দিষ্ট রাজ্যের হয় না। নদী দেশের সম্পদ। কোনো রাজ্য তাকে নিজের বলে দাবি করতে পারে না। যেখানে ঘাটতি রয়েছে সেখানে পানি শুধুমাত্র প্রয়োজনের জন্য ব্যবহার করা উচিত।’
এই রায়ের পর কেন্দ্রীয় সরকার মমতাকে পথে আনতে পারবে, নয়তো পশ্চিমবঙ্গের দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে ঢাকার সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়িত করতে পারবে। যদি আপত্তি তুলে মমতা আদালতেরও দ্বারস্থ হন সে ক্ষেত্রে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দোহাই দিয়ে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সম্পন্ন করতে পারে ভারত সরকার। সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে এদিন একই সঙ্গে তামিলনাড়– রাজ্যের জন্য কাবেরীর পানির ভাগ কমিয়ে দিয়ে বাড়ানো হয় কর্নাটকের পরিমাণ। বেঙ্গালুরুতে অনেক বেশি সংখ্যক বাসিন্দা বসবাস করেন যুক্তি দেখিয়ে পানি চাহিদা বাড়ায় ১৪.৭৫ হাজার মিলিয়ন কিউবিক ফিট (টিএমসিএফটি) কাবেরীর পানি অতিরিক্ত পেতে চলেছে কর্নাটক। কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে সুপ্রিমকোর্টের এই রায় রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন