ভারতের কেরালায় তিন দফা ভূমিধসে নিহত বেড়ে ৫৪

ভারতের কেরালা রাজ্যে তিন দফায় ভয়াবহ ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ জনে।
এছাড়া শতাধিক মানুষ এখন আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কেরালার ওয়েনাড় রাজ্যে চার ঘণ্টা ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ভারতের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীসহ (এনডিআরএফ) বিভিন্ন সংস্থা উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

সেখানে ভারী বৃষ্টি এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধসে পড়ায় উদ্ধারকাজ ব্যহত হচ্ছে। ভয়াবহ এই দুর্যোগের পর কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এলডিএফ সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

এছাড়া বিজেপি প্রধান জেপি নাড্ডাকে দলীয় কর্মীদের উদ্ধার কাজে সহায়তা নিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরেশ গোপীর সঙ্গেও কথা বলেছেন মোদী।

দুর্যোগে নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এছাড়া আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

ঠিক কতসংখ্যক মানুষ ঘর-বাড়ি বা অন্য জায়গায় আটকে রয়েছেন, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়া নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

যেখানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে তার কাছেই চালিয়ার নামে একটি নদী রয়েছে। মালাপ্পুরমের নীলাম্বুরের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে নদীটি। স্থানীয়দের আশঙ্কা, অনেকেই খরস্রোতা এই নদীতে ভেসে গেছেন।

ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চার ঘণ্টার মধ্যে ওয়েনাড়ের পাহাড়ি গ্রাম মেপ্পাদির কাছে তিন দফা ভূমিধস আঘাত হানে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, ভূমিধসের পরপরই সব সরকারি সংস্থা উদ্ধারকাজে নেমেছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আটকে থাকা লোকজনকে দ্রুত বের করে আনার জোর প্রচেষ্টা চলছে।

পিনারাই বিজয়ন আরও জানান, কেরালার নিজস্ব বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর ও এনডিআরএফের দল বিপর্যস্ত এলাকায় পৌঁছেছে। এনডিআরএফের আরও বেশি সংখ্যক সদস্য পাঠানো হচ্ছে। ভূমিধসে ৭০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিনা জজ।

কেরালা রাজ্যের বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং এনডিআরএফ ছাড়াও কান্নুর প্রতিরক্ষা সুরক্ষা কর্পসও উদ্ধার অভিযানে যোগ দিতে প্রস্তুত রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার শিগগির উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে।

কংগ্রেস নেতা এবং ওয়েনাড়ের সাবেক সাংসদ রাহুল গান্ধী বলেছেন, তিনি এই বিপর্যয়ের ঘটনায় ‌‌‘গভীরভাবে শোকাহত’ হয়েছেন। যারা এই দুর্যোগে স্বজন হারিয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে রাহুল গান্ধী বলেন, আমি আশা করি যারা এখনও আটকা পড়ে আছেন তাদের শিগগির নিরাপদে সরিয়ে আনা সম্ভব হবে।