ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচন, বিপর্যয়ের দিকে বিজেপি

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার প্রাথমিক ফলাফলে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি)-কংগ্রেস জোট ও হরিয়ানায় বিজেপি এগিয়ে।

মঙ্গলবার সকালে জম্মু ও কাশ্মীর ও হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা শুরু হয়। দুই রাজ্যেই প্রাথমিক গণনার পর দেখা যাচ্ছে বুথ ফেরত ভোট সমীক্ষার ফল মেলেনি। জম্মু ও কাশ্মীরে ত্রিশঙ্কু বিধানসভার কথা বলা হয়েছিল সমীক্ষায়। কিন্তু সেখানে কংগ্রেস-ন্যাশনাল কনফারেন্স জোট ৪৮টি আসনে এগিয়ে আছে। বিজেপি এগিয়ে ২৮টি আসনে। পিডিপি চারটিতে। সরকার গঠনের জন্য ৪৬টি আসন পাওয়া দরকার।

হরিয়ানায় ৯০ সদস্যের বিধানসভায় প্রবল লড়াই হচ্ছে। প্রথম দিকে কংগ্রেস এগিয়ে থাকলেও পরে বিজেপি তাদের পেছনে ফেলে দেয়। বিজেপি এখন ৪৭টি কেন্দ্রে, কংগ্রেস ৩৭টিতে এবং অন্যরা চারটি কেন্দ্রে এগিয়ে আছে। এগিয়ে পিছিয়ে থাকার এ প্রবণতার বদল না হলে বিজেপি তৃতীয়বারের জন্য হরিয়ানায় সরকার গঠন করবে। আর এটা কংগ্রেসের কাছে বড় রাজনৈতিক ধাক্কা হবে।

কারণ, হরিয়ানায় এবার কৃষকরা বিজেপির ওপর ক্ষুব্ধ ছিল, কুস্তিগিরদের নিয়ে বিতর্কের প্রভাব সাধারণ মানুষের উপর পড়েছিল, জিনিসের ক্রমবর্ধমান দামের ফলে মানুষের ক্ষোভ ছিল। তারপরেও কংগ্রেস যদি এই রাজ্যে জিততে না পারে, তাহলে তা রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খাড়গের ব্যর্থতাকে চিহ্নিত করা হবে।

হরিয়ানায় কংগ্রেসের প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অতীতে অনেকবার দলকে ডুবিয়েছে। এবারো সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রবল ছিল। ভূপিন্দর হুডা, কুমারী শৈলজা, রণদীপ সিং সূরযেওয়ালারা এক হয়ে লড়াই করতে পারেননি। তবে তারা দলের জয় নিয়ে এতটাই নিশ্চিত ছিলেন যে, কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তার লড়াই শুরু হয়ে গেছিল।

জম্মু ও কাশ্মীরে বিজেপিকে সরকারে আসতে গেলে জম্মুতে বিপুলভাবে জিততে হত। কিন্তু এবার জম্মুতে বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ ছিল। প্রাথমিক ফলাফলে তার প্রতিফলন হয়েছে। কংগ্রেস জম্মুতে বেশি আসনে লড়েছে। এনসি কাশ্মীরে।

কাশ্মীরে মানুষ ন্যাশনাল কনফারেন্সকেই বেশি করে ভোট দিয়েছেন। পিডিপি মাত্র চারটি আসনে এগিয়ে। বাকিগুলিতে ওমর আবদুল্লার দল এগিয়ে। গত লোকসভা নির্বাচনে ওমর জিততে না পারলেও বিধানসভা নির্বাচনে তিনি দলকে টেনে নিয়ে গেছেন।

তবে জম্মু ও কাশ্মীরে রাজ্যপাল সাতজন বিধায়ককে মনোনীত করবেন। তারা নির্বাচিত বিধায়কের মতো সব সুবিধা পাবেন। তারা ভোটও দিতে পারবেন।

কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর এই প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচন হলো। উপত্যকার ভোটে এই কংগ্রেস-ন্যাশনাল কনফারেন্স এই বিষয়টিকে নির্বাচনি প্রচারের অন্যতম বিষয় করেছিল।