ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্ষদে ব্যাপক রদবদল

ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে রক্তক্ষয়ী হামলার পর দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডে (এনএসএবি) ব্যাপক পরিবর্তন আনল নরেন্দ্র মোদি সরকার। এ পর্ষদের শীর্ষে বসানো হলো ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) সাবেক প্রধান অলোক যোশিকে।
২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি র–এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সম্প্রতি পহেলগাঁওকাণ্ডে ও পাকিস্তানের সঙ্গে বেড়ে যাওয়া উত্তেজনার মধ্যেই এই পরিবর্তন আনল মোদি সরকার। আর এর মাধ্যমে দীর্ঘ সাত বছর পর পুনর্গঠন দেখলো এনএসএবি।
বুধবার ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের খবর জানায় বার্তা সংস্থা পিটিআই ও এএনআই।
একই সঙ্গে এদিন বোর্ডের বাকি ৬ সদস্যের নামও ঘোষণা করা হয়েছে।
মোদি সরকারের সূত্রের বরাতে পিটিআই ও এএনআই জানিয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলের সাবেক এয়ার কমান্ডার এয়ার মার্শাল পিএম সিনহা, দক্ষিণাঞ্চলের সাবেক সেনা কমান্ডার লে. জেনারেল একে সিং এবং সাবেক রিয়ার অ্যাডমিরাল মন্টি খান্না নবগঠিত বোর্ডের সদস্য হয়েছেন।
পাশাপাশি নবগঠিত এনএসএবির সদস্য করা হয়েছে ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস কমিশনের দুই সাবেক কর্তা রাজীব রঞ্জন ভার্মা ও মনমোহন সিংকে। বোর্ডের ষষ্ঠ সদস্য হয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্তা বি ভেঙ্কটেশ ভার্মা।
এনএসএবির প্রধান দায়িত্ব ভারতের জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা ও পর্যালোচনা করে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আলোকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা। এনএসএবি সেই সুপারিশ করে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলকে (এনএসসি)।
জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলও মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে এনএসএবির পরামর্শ চায়। পরিস্থিতি বিচারে এনএসএবি সেই সব বিষয়ে সরকারকে তার অভিমত জানায়।
এই জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের শীর্ষে রয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর অজিত কুমার দোভাল এই জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের উপদেষ্টা।
এদিকে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। ঘটনাটিকে ২০০০ সালের পর অঞ্চলটিতে অন্যতম ভয়াবহ হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ওই ঘটনার একদিন পর (২৩ এপ্রিল) ভারত একতরফাভাবে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত গুরুত্বপূর্ণ পানি বণ্টন চুক্তি বা সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত ঘোষণা করে।
আর এর পরদিনই অর্থাৎ ২৪ এপ্রিল পাকিস্তান পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায় যে, তারা ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি কার্যকরভাবে স্থগিত করতে পারে এবং ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিতে পারে।
ভারত দাবি করেছে, ২২ এপ্রিলের ওই হামলার সঙ্গে সীমান্ত পারের অর্থাৎ পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত তারা এ বিষয়ে কোনো দৃঢ় প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
বিপরীতে, পাকিস্তান এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন