ভারতের প্রতিরক্ষা তথ্য তছনছে চীনের গোপন ইউনিট

ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো সাইবার হামলার লক্ষ্যবস্তু করতে পারে চীন। সম্ভাব্য এ সাইবার হামলার ব্যাপারে সতর্ক করেছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

গোয়েন্দা রিপোর্ট মতে, চীনের লক্ষ্য মোটেও অস্ত্রে ঘায়েল করা নয়। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর সাইবার হামলা চালিয়ে সব তথ্য তছনছ করে দিতে চায় দেশটি।

এ লক্ষ্যে একটি গোপন সামরিক ইউনিট গড়ে তুলেছে চীনা সেনাবাহিনী পিপল’স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। নাম দেয়া হয়েছে ‘ইউনিট ৬১৩৯৮’। সাইবার হামলার মাধ্যমে স্পর্শকাতর যেকোনো তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে দলটি। শনিবার এ খবর দিয়েছে রয়টার্স।

গোয়েন্দাদের দাবি, বিশ্বব্যাপী বৃহৎ পরিসরে সাইবার যুদ্ধ শুরু করেছে চীন। এ যুদ্ধের অন্যতম প্রতিপক্ষ ভারত। পিএলএর ইউনিট ৬১৩৯৮ বর্তমানে ভূ-অবস্থানগত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, বিভিন্ন তথ্যসূত্র ট্র্যাকিং বা শনাক্তকরণ, উৎসগুলোতে ঢুকে পড়ে তথ্য চুরির সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

ইউনিটটির সদর দফতর সাংহাইয়ে। চীনের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ ইউনিটে প্রস্তুত একদল হ্যাকারও। এর আগেও বিদেশি সংস্থায় হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে এই ইউনিটের বিরুদ্ধে। তাই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না ভারত।

বিভিন্ন ম্যালওয়্যারের সাহায্যে মূলত তথ্য চুরি করে এই ইউনিট। এরা চীনা সেনার স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সের অংশ। গেল অক্টোবরেই যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ আনে, জেট ইঞ্জিন ডেটা হ্যাক করেছেন চীনা গোয়েন্দা কর্মকর্তরা। ভারত সম্প্রতি দেশের মাটিতে বেশ কয়েকটি এয়ারক্রাফট তৈরি করেছে।

সদ্য জলে নেমেছে নিউক্লিয়ার সাবমেরিন। তাই ভারতের সামরিক শক্তিতে চীনের নজর বাড়ছে বলে মনে করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। সম্প্রতি চীনা সেনাবাহিনীর এই বিশেষ ইউনিট বিশ্বজুড়ে সাইবার-গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠলে তা অস্বীকার করে চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে আমেরিকাভিত্তিক একটি কম্পিউটার নিরাপত্তা সংস্থা দাবি করেছিল তারা আন্তর্জাতিক একটি হ্যাকিং সিস্টেমের সঙ্গে সাংহাইয়ের একটি সামরিক ইউনিটের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে।

কিন্তু চীন বলছে, এ অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। আর তা ছাড়া হ্যাকিং কাকে বলে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সেরকম কোনো সংজ্ঞাও নেই। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যে জবাব দেয়া হয়, তার প্রধান যুক্তি- সাইবার জগতে যারা হামলা চালায় তারা প্রায়শই তাদের নাম-পরিচয় গোপন রাখে।

তারা বলছে, যে ইন্টারনেট ঠিকানা থেকে এসব হামলা চালানো হয়েছে তার সঙ্গে চীনের যোগাযোগটি মার্কিন কম্পিউটার কোম্পানি ম্যানডিয়েন্ট প্রমাণ করতে পারেনি।