ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে বাংলাদেশের

যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭৬ হাজার মেট্রিক টন। ২০২৪ সালেভারত থেকে ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৭৮০ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। আর ২০২৩ সালে আমদানির পরিমাণ ছিল ২১ লাখ ১৪ হাজার ৫০৯ মেট্রিক টন।

২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে আমদানি বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৫ হাজার ৭৪৬ মেট্রিক টন। ডলার সংকট, যুদ্ধ, বৈশিক মন্দা আর বাণিজ্যে নানান প্রতিবন্ধকতা এ অবস্থার জন্য দায়ী বলছেন ব্যবসায়ীরা।

বন্দর সূত্র জানায়, দেশের ১৬টি বন্দরের সঙ্গে ভারতের আমদানি রফতানি বাণিজ্য সক্রিয়ভাবে চলছে। ভারতের সঙ্গে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য সম্পন্ন হয়ে থাকে।

২০১৯ সাল থেকে বৈশ্বিক মন্দায় ডলারের সংকটের কারনে কমে আসছে আমদানির পরিমাণ। এছাড়া দ্রুত পণ্য ছাড়করণ ও অবকাঠামোগত নানান সমস্যাও বাণিজ্য ঘাটতির কারণ হয়ে উঠে।

তবে অন্তর্বতীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বাণিজ্য সম্প্রসারণে নানান উদ্যোগ নেয়। গত ডিসেম্বরে বেনাপোল বন্দরের শূন্য রেখায় চালু করা হয় কার্গোভেহিকেল টার্মিনাল ও ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে বন্দরে বসানো হয় আধুনিক স্ক্যানিং মেশিন। দ্রুত পণ্য খালাস ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের উদ্যোগে কমিটি গঠন করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্ত বর্তমানে বাণিজ্যে অনেকটা গতি ফিরে এসছে বলে জানান ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। যা সামনের দিনে নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আমদানি, রফতানি বাণিজ্য বাড়াতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে শিল্প কলকারখানার কাচামাল, তৈরি পোশাকের কাচামাল, শিশু খাদ্য, টায়ার , মেশিনারিজ, ওষুধের কাচামাল, কেমিকেলসহ. ফল, পিয়াজ, চাল, ডাল, সুতা, তুলাসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য।

আর রপ্তানি পণ্যের মধ্যে পাট, পাটের তৈরি পণ্য, গার্মেন্টস সমাগ্রি, তৈরি পোশাক, কেমিকেল, টিসু, মেলামাইন, মাছ উল্লেখ্যযোগ্য।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, বছরে ভারত থেকে আমদানি হয় ৫০ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য এবং ৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি হয় ভারতে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশিরভাগ আমদানিকারকেরা বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। তবে দ্রুত পণ্য খালাস নানান প্রতিবন্ধকতা বন্ধ হলে বাণিজ্য সহজীকরন ব্যবস্থা নিশ্চিত হলে আমদানি ও রাজস্ব বাড়বে।

বেনাপোল বন্দরের ডাইরেক্টর মামুন তরফদার জানান, বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য সম্পন্ন হয়ে থাকে। ইতোমধ্যে বেনাপোল বন্দরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ সমাপ্ত হয়েছে। পূর্বের চেয়ে বন্দরে ধারন ক্ষমতা বেশি। অবকাঠামো উন্নয়ন বাণিজ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার শরীফুল হাসান জানান, বাণিজ্য সম্প্রসারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ইতোমধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে কাজ শুরু করেছে। আশাবাদী সামনের দিনে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও সহজীকরণে এ উদ্যোগ বড় ভূমিকা রাখবে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার কামরুজ্জামান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে দিয়ে দেশের মধ্যে আমদানি সমান্য কমলেও রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। তবে আগের তুলনায় বেড়েছে রপ্তানি বাণিজ্য।