ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে সার্ক সম্মেলনের অনিশ্চয়তা কাটছে না
দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশের আঞ্চলিক জোট সার্কের সম্মেলন কবে হবে- তা নিশ্চিত নয়। জোটের সদস্য দুই প্রতিবেশি দেশ- ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে সম্মেলন হওয়া নিয়ে কার্যত অনিশ্চয়তা কাটছে না।
১৯৮৫ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় সার্ক (দ্য সাউথ এশিয়ান এসোসিয়েশন ফর রিজিওয়নাল কো-অপারেশ)।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নই ছিল এর লক্ষ্য।
এ ছাড়া এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে পাশাপাশি দাঁড় করানোর এক বিশেষ ভূমিকায়ও দেখা গেছে সার্ককে।
দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশ- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা নিয়ে এ সার্ক গঠিত।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বহুবার সার্কভূক্ত দেশগুলোর নেতারা একই টেবিলে বসে বৈঠক করেছেন। সেখানে যেমন দেখা গেছে ভারতের সরকার প্রধানকে, তেমনি পাকিস্তানের সরকার প্রধানও ছিলেন। তারা কথা বলেছেন, করমর্দনও করেছেন।
এবার সংকট তৈরি হয়েছে মূলত সম্মেলনের আয়োজনকে ঘিরে। পাকিস্তান চাচ্ছে তাদের দেশে সম্মেলন হোক। এটা মানতে রাজি নয় ভারত। এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা।
বৃহস্পতিবার ভারতের দিল্লিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি অনলাইন জানায়, সার্ক সম্মেলন হওয়া নিয়ে পরিস্থিতির বাস্তবিক কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। কারণ, পাকিস্তান তাদের অবস্থান থেকে সরে আসছে না।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি গত সোমবার বলেন, ইসলামবাদ (সার্ক) সম্মেলনের আয়োজন করতে প্রস্তুত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভারত স্বশরীরে না পারলে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে অংশ নিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘আমরা সার্ক সম্মেলন নিয়ে গণমাধ্যমে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেছি। আমরা ২০১৪ সালের পর থেকে কেনো সার্ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না, তার পেছনের বিষয়গুলো সম্পর্কেও অবগত।’
এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তখন থেকে এখন পর্যন্ত বাস্তবিক কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। অতএব সম্মেলন হওয়ার বিষয়ে কোনো ঐক্যমতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।’
২০১৪ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে সর্বশেষ সার্ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সম্মেলন ২০১৬ সালে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মিরের উরিতে ভারতীয় সেনাদের একটি ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলা হয়। এর জেরে ভারত ওই সম্মেলনে যোগদানের বিষয়ে অসম্মতি জানায়।
কাশ্মিরে হামলার জন্য বরাবরই পাকিস্তানের মদতের কথা বলে আসছে ভারত। তবে পাকিস্তান এ দাবি অস্বীকার করে আসছে।
পরে ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলনের ওই আসর স্থগিত হয়ে যায়। সে সময় সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং ভুটানও অসম্মতি জানিয়েছিল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন