ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে
বছরের বেশিরভাগ সময় তাদের কাটে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাস এলেই মন টানে বাংলাদেশে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে আসেন নিজ দেশে।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাতের প্রথম প্রহর থেকেই অগুণতি মানুষের ঢল। এর ভিড়েই ইউরোপ থেকে আসা বাঙালিদের একটি দল মনযোগ কেড়ে নিল। কেবল এই দিনটিতে শহীদ মিনারে ফুল দেবেন বলেই তারা ছুটে এসেছেন দেশে।
পাকিস্তান আমলে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতির দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির আন্দোলন ইতিহাস হয়ে গেছে গোটা বিশ্বেই। এই আন্দোলনের পথ ধরেই পরে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন এবং সব শেষে স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন দেশ পেয়েছে বাঙালিরা। তেমনি বিশ্বও পেয়েছে মাতৃভাষার প্রতি সম্মান জানাতে একটি দিবস।
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ায় ১৯৯৯ সালের পর থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব জুড়েই। যে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলা ভাষার সংগ্রামকে বাধা দিতে চেয়েছিল, সেই শাসক গোষ্ঠী নিজেও এখন পালন করে দিনটি।
যতই আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হোক, বিদেশ বিভুইয়ে কি আর দেশের মতো আমেজ থাকে? তাই ইউরোপ থেকে তারা ছুটে এসেছেন দেশের পানে।
২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর যে আয়োজন শুরু হয়, তার চলতে থাকে ২১ সারারাত এবং পরে দিনভর।
বুধবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা হলো এমন জনা বিশেক মানুষের সঙ্গে। যাদের বেশিরভাগ সদস্য আজকেই দেশে এসেছেন।
ইউরোপীয়ান প্রবাসী বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন-ইপিবিএর ব্যানারে আসা মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইউরোপের ১৭টি দেশের প্রবাসীদের নিয়ে গঠিত এই সংগঠন। তারা প্রতিবছরই ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে দেশে আসেন। এবং সবাইকে নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওসমান হোসেন মনির বলেন, ‘এখানে বেশ কয়েকজন আজকে সকালে সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স ও ইতালি, পর্তুগাল থেকে এসেছেন। তারা সবাই এসেছেন শুধু এই আয়োজনে অংশ নেয়ার জন্য।’
‘বাংলা আমাদের প্রাণের ভাষা। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই ভাষা পেয়েছি। আর এই টানেই আমরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছি।’
সার্বিক আয়োজন কেমন লাগছে- এমন প্রশ্নে মনির বলেন, ‘অনেক ভালো লাগছে। এটা একটা মিলনমেলার মত। যদি আমরা কেউ নাও আসতে পারি সেক্ষেত্রে যে যেসব দেশে থাকে সেখানে দিবসটি পালন করা হয়।’
এসময় সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি জিকু বাদল, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ফেরদাউস করিমসহ সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন