ভূরুঙ্গামারীতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের বিজয়ী দলকে সাসপেন্ডের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট- ২০২২ এ কুড়িগ্রাম জেলা পর্যায়ে খেলায় অংশ নিয়ে ৫/১ গোলে জয় লাভ করার ১ ঘন্টা পরে বিজয়ী দলকে সাসপেন্ট করার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ করেছে এলাকাবাসী।
সেই সাথে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও জোড় দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বুধবার (১২ অক্টোবর ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী এই অবরোধ করেন।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট- ২০২২ এ ভূরুঙ্গামারী উপজেলা চ্যাম্পিয়ন হয় মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
গত ১১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) জেলা পর্যায় খেলতে যায় দলটি। কুড়িগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে সকাল ১০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত খেলায় মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর মুখোমুখি হয় ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতে ৫/১ গোলে জয়লাভ করে মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আনন্দে মেতে ওঠে টিমসহ গোটা উপজেলাবাসী। কিন্তু একটি ঘোষণায় সেই আনন্দ নিমিষেই ফুরিয়ে যায়। খেলা শেষ হওয়ার ১ ঘন্টা পর কর্তৃপক্ষ মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দলকে সাসপেন্ট করে।
বিজয়ী দলকে সাসপেন্ট করার কারণ হিসেবে বলা হয় খেলোয়াদের নামের যে তালিকা দেওয়া হয় সেই নামের সাথে জন্ম তারিখ ও জন্ম নিবন্ধন সনদের মিল না থাকায় মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দলকে সাসপেন্ড করা হলো।
এখবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান । ১২ অক্টোবর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এসময় দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবীতে নানা স্লোগান দেন।
অন্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এলাকাবাসী জানান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ফাইল গুলো পাঠানোর সময় মইদাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্ম নিবন্ধন এর জায়গাতে বাঁশ জানী সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের জন্মনিবন্ধন নাম্বার গুলো পাঠিয়ে দেয়। সেখানে খেলোয়ারদের নাম মিল থাকলেও জন্মসনদ নাম্বারে কোন মিল পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট অফিসের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
ক্ষুদে খেলোয়ারদের অভিভাবক আলাল, আমিনুর ও ইসমাইল হোসেন জানান বড় আশা নিয়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের জেলা পর্যন্ত খেলতে পাঠাইছি। ভালো খেলে জিতেও তারা বাদ পড়ছে। আমরা ধারনা করি যে এটা কোন ওপড় মহলের অবহেলার কারনে এসব হয়েছে। আমাদের দাবী এর সঠিক তদন্ত করে আজকের বিজয়ী দলকে পরর্বতী খেলাতে অংশ গ্রহনের ব্যবস্থা করতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দলকে বাতিলের দায় কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও খেলা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ কোন ভাবেই এড়াতে পারেন না। কারণ এসব কাগজপত্র ১৫ দিন পূর্বে পাঠানো হয়েছে। খেলার আগে যাচাই বাছাই না করে কষ্ট করে খেলে ৫/১ গোলে বিজয়ী হওয়ার ১ ঘন্টা পরে কেন তথ্য যাচাই বাছাই করা হবে।
এ বিষয়ে মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা বেগম জানান, আমি অসুস্থ থাকায় সহকারি শিক্ষক মাফিদুল ইসলামকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ অফিসে পাঠিয়েছিলাম। এতে কি কারণে এমন হয়েছে তা আমি বলতে পারবো না।
সহকারি শিক্ষক মাফিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ১৭ ছাত্র (খেলোয়ারের) নামের সঠিক তালিকা ও জন্মসনদ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সঠিক সময়ে জমা দিয়েছি। আমরা সকল তথ্য সঠিক ভাবে দিয়েছি এবং আমরা এসব খেলোয়ার নিয়েই উপজেলা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি৷
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ এর নিকট জানতে চাইলে মইদাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দলকে সাসপেন্ট করার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন