ভূরুঙ্গামারীতে বিদেশী চেহারার অসুস্থ ২ সন্তানকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বাবা-মা
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ধলডাঙ্গায় এক পরিবারে জন্ম নেয়া তিন সন্তানের মধ্যে জন্ম থেকেই দু’সন্তানের চেহারা হয়েছে বিদেশীদের মতো। হঠাৎ দেখে অনেকে চমকে উঠলেও এলাকাবাসী সহজভাবে নিয়েছে এই দুই ভাইকে। তবে প্রচন্ড রোদে ভীষণ কষ্ট হয় এই দুই ভাইয়ের। চোখে ভীষণ চাপ পরে, চামড়ায় লালচে ও কালচে দাগ ওঠে। চিকিৎসকরা বলছেন রোদে চোখে কালো চশমা এবং স্কিনের জন্য দক্ষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ভালো থাকবে তারা।
জেলার সর্ব উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ঢলডাঙ্গা মাস্টারপাড়া গ্রামের দরিদ্র দর্জি আনোয়ার হোসেন। আপন খালোতো বোন নুর নাহারের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর জন্ম নেয় প্রথম সন্তান নাঈম ইসলাম। কিন্তু তার ধবধবে চেহারা দেখে তারা একটু চমকে ওঠেন। সৃষ্টিকর্তার এই উপহারকে তারা মেনে নিতে বাধ্য হয়। এরপর মেঝো ছেলে রাকিব ইসলাম একজন সাধারণ বাঙালি ছেলের মতো জন্মগ্রহন করে। তৃতীয় সন্তান বায়েজিদ ইসলাম বড় ভাই নাঈম ইসলামের মতো সাদা চেহাড়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। দরিদ্র পরিবারে ৩সন্তান জন্ম নেয়ার পর পরিবারের দারিদ্রতা দূরীকরণের জন্য তিনি ঢাকায় চলে যান কাজের উদ্দেশ্যে। এখন তিনি ঢাকাতেই দর্জির কাজ করে যে আয় করেন তাই দিয়েই কোন রকমে সংসার চলছে। বড় ছেলে নাঈম ইসলাম ইন্টার পাশ করার পর বাবার দুর্দশা ঘোচাতে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরী করতে যায়। সেখানে এক বছর কাজ করার পর চোখে ক্ষীণ দেখার কারণে কাজকর্মে সমস্যা হওয়ায় ইদুল ফিতরের এক সপ্তাহ পর গ্রামে ফিরে আসে সে।
নাঈমের মা নুর নাহার বলেন, ছেলে দুটোর ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি। এখন আমরা আছি ওদের দুজনের দেখবার করছি,আমরা মরে গেলে ওদের দুই ভাইয়ের কি হবে।
প্রতিবেশী সেকেন্দার আলী বলেন, নাঈম ছাত্রও ভালো।অভাবের কারনে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে নাই । এ বয়সে অনেকে সংসারের হাল ধরলেও স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারনে সে ঘরবন্দী। কোন ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠান যদি তার একটা চাকুরীর ব্যবস্থা করতো পরিবারটির উপকার হতো।
নাঈম বলেন,আমার চেহারা এমন হওয়ার কারনে কাজ করতে পারি না।রোদে গেলে শরীরে ফোসকা পড়ে।চোখে ঠিকমত দেখতে পাই না।ছায়ার ভিতরে কোন কাজ কর্মের ব্যবস্থা করে দিলে আমার উপকার হতো।
তিনি আরো বলেন, আর্থিক কারণে চোখের ও স্কিনের ডাক্তার দেখানো সম্ভব হয়নি। পরিবারের দারিদ্রতা মেটাতে একটি চাকুরী হলে খুব ভালো হতো। আমার এই চেহারা নিয়ে আমার কোন আপসোস নেই। আমি এতেই খুশি।
কুড়িগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ এস.এম আমিনুল ইসলাম বলেন,থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যার কারণে তারা চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে। এটিকে লিকোডারমা নামে অভিহিত করা হয়। এরফলে চামড়ায় প্রদাহ হয়। চোখে চাপ সৃষ্টি হয়। এই সমস্যা নিরসনে চিকিৎসকদের তথ্যাবধানে থাকতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন