ভ্যাট ফাঁকি কমাতে এনবিআর’র নতুন কৌশল
পহেলা জানুয়ারি থেকে বছরে ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেন বা পণ্য বিক্রি হয় এমন প্রতিষ্ঠানকে হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে এনবিআর অনুমোদিত ভ্যাট সফটওয়্যারে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ আদেশ জারি করেছে এনবিআর। এতে রিটার্ন দাখিলে যেমন সহজ হবে, তেমনি ভ্যাট ফাঁকি কমবে বলে মনে করে এনবিআর। তবে এর আগে ২০১১ সালেও এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। করদাতারা বলছেন, এতো অল্প সময়ে এই আদেশ বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে।
ভ্যাট আইন অনুযায়ী ক্রয় ও বিক্রয় রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন ধরনের নথি সংরক্ষণ করতে হয় করদাতাদের। যা দাখিল করতে হয় রিটার্নের সঙ্গে। বর্তমানে ম্যানুয়াল রেজিস্ট্রার ও কম্পিউটারে দুইভাবেই হিসাবরক্ষণ করা যায়। কিন্তু ভ্যাট ব্যবস্থা অটোমেটেড না হওয়ায় করদাতাদের প্রদত্ত হিসাব সরাসরি যাচাই করতে পারেনা এনবিআর। অথচ ২০১৯র জানুয়ারিতে সারা দেশে ভ্যাট অনলাইন ও জুলাইয়ে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে এনবিআর। এরই অংশ হিসাবে যথাযথভাবে ভ্যাট আদায়ে নির্দিষ্ট সফটওয়্যারে হিসাব সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করছে এনবিআর। যা কার্যকর হবে জানুয়ারিতে।
এনবিআর’র সদস্য রেজাউল হাসান বলেন, ‘যেহেতু নতুন আইন বাস্তবায়নের মূল শর্তই ছিলো যে, এটা অটোমেটেড হবে। সে বিষয়টা সামনে রেখে আমরা চাচ্ছি, যারা ৫ কোটি টাকার ওপরে টার্নওভার তারা সবাই ভ্যাট দাতা। তাহলে তারা যদি তাদের সফটওয়্যারটা তৈরি করতে পারেন তাহলে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে যে হিসেবে নিকেশ সেটার আর কোনো প্রয়োজন হচ্ছে না। তাদের জন্য বরং অপরেশনটা হবে সহজ এবং আমাদের সহজ হবে অডিট করা। এখন ১৫ শতাংশ ভ্যাট নিচ্ছে কিন্তু সেই টাকাটা সরকারের কোষাগারে জমা পড়ে না। ‘
এক্ষেত্রে এনবিআরের তালিকাভূক্ত যোগ্য প্রতিষ্ঠান থেকে বা তাদের পরীক্ষিত ভ্যাট সফটওয়্যার কিনতে হবে করদাতাদের। চাইলেই সফটওয়্যারে ঢুকে হিসাব নিরীক্ষা করতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
ভ্যাট অনলাইনের উপ-প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘একজন লোক একটি সফটওয়্যার নিয়ে দুই দিন পরে হাওয়া হয়ে গেল। এর দায়-দায়িত্ব তো এনবিআর নিতে পারবে না। সেই জন্য কোম্পানিগুলোর কিছু বৈশিষ্ট্য দেয়া হবে।’
করদাতারা বলছেন, সফটওয়্যারের বৈশিষ্ট্যগুলো বেশ জটিল। ছোট প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বল্প সময়ে এটি বাস্তবায়ন দুরহ হবে।
ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের উপ-ব্যবস্থাপক বলেন, ‘এই সফটওয়্যারের যে বৈশিষ্ট্য দেয়া হয়েছে তা প্রস্তুত করার জন্য যে সময় প্রয়োজন, যে প্রতিষ্ঠানের ৫ কোটি টাকা টার্নওভার তার পক্ষে এটা কাজটা করা অনেক কঠিন হবে। কয়েকটা উল্লেখ করছি, পূর্ণাঙ্গ অটোমেটিক সিস্টেম ওই প্রতিষ্ঠানের থাকতে হবে, এই সফটওয়্যারের ভিতরে রিকরসিলেশসন রিপোর্ট থাকতে হবে। তাদের ৬ বছর যাবৎ এই ডাটা সংরক্ষণ করতে হবে।’
নির্ধারিত সফটওয়্যারে হিসাব সংরক্ষণ না করলে জরিমানা ও দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে সাধারণ আদেশে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন