ভয়ংকর এক সিরিয়াল ধর্ষক

এ যেন ভারতের কুখ্যাত সিরিয়াল ধর্ষক সাইকো শঙ্কর বাংলা সংস্করণ! দক্ষিণ ভারতের ত্রাস সাইকো শঙ্কর ধর্ষণের পর নারীদের হত্যা করলেও ‘বাংলার শঙ্কর’র পৈশাচিকতা আরও বর্বর ও নির্মম। যে কিনা লাশ কাটার ঘরে ময়নাতদন্তের জন্য আসা নারীর লাশের ওপর চালাত বিকৃত যৌনাচার।

অবশেষে লাশ কাটা ঘরের সিরিয়াল ধর্ষক মো. সেলিমকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার শাহ নেওয়াজ খালেদ বলেন, ‘৩২ বছর বয়সী এক নারী এবং ১২ বছর বয়সী লাশের শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গে অস্বাভাবিক দেখতে পেয়ে চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা মৃতদেহের ‘এইচভিএস’ পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠান। তাদের ‘এইচভিএস’ এ অভিন্ন পুরুষের বীর্য পেলে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। তদন্তে লাশঘরের প্রহরী সেলিমের সন্ধান মেলে। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ ঘটনায় সিএমপির পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ’ জানা যায়, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ৩২ বছর বয়সী এক নারীর লাশের ময়নাতদন্ত করতে চমেক হাসপাতালে আনা হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল আনা হয় ১২ বছর বয়সী আরেক শিশুর। এ দুটি লাশের বলপ্রয়োগজনিত কোনো আঘাতের চিহ্ন কিংবা মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া না গেলেও স্পর্শকাতর অঙ্গে পুরুষের বীর্যের উপস্থিতিতে চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়।

তখন তারা লাশ দুটির এইচভিএস পরীক্ষার জন্য ঢাকার সিআইডিতে পাঠায়। পরীক্ষায় লাশের শরীরে অভিন্ন পুরুষের বীর্যের উপস্থিতি পায়। ফেব্রুয়ারির শুরুতে ঘটনাটি তদন্তে নামে চট্টগ্রাম সিআইডি। তদন্তকালে সিআইডি জানতে পারে লাশ দুটির ময়নাতদন্তের আগে পাহারায় ছিলেন লাশঘরের অস্থায়ী প্রহরী সেলিম। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে আসে নারীর লাশের ওপর চালানো যৌন নির্যাতনের নির্মম কাহিনি।

সিআইডির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, চমেক হাসপাতালের লাশঘরের অস্থায়ী প্রহরী হিসেবে ১৫ বছর ধরে কর্মরত আছেন সেলিম। ময়নাতদন্তের জন্য আসা কোনো নারীদের লাশের ওপর তার লুলুপ দৃষ্টি পড়লেই বিকৃত যৌনাচারের জন্য টার্গেট করত। এরপর নেশা করে লাশের শরীরের ওপর চালাত বিকৃত যৌনাচার। প্রাথমিকভাবে দুই নারীর লাশের ওপর যৌনাচারের কথা স্বীকার করলেও সিআইডি ধারণা করছে আরও নারীর লাশের ওপর অভিন্ন কায়দায় নির্যাতন চালানো হতে পারে। নারীর লাশের ওপর যৌন নির্যাতন ছাড়াও আরেক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০১৭ সালে পাঁচলাইশ থানায় ধর্ষণের অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।