ভয়ঙ্কর নরপিশাচে পরিণত হয়েছে আ.লীগ : খালেদা
রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজারে যাওয়ার পথে কয়েক দফায় গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া। এর জন্য সরাসরি সরকারি দল আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন তিনি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।
মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো আধুনিক রাজনৈতিক দল নয়, এটি সন্ত্রাসীদের আখড়া। এরা সবসময় রক্ততৃষ্ণায় কাতর থাকে। এই দলটি দেশকে হত্যা, দখল, হাঙ্গামা, রক্তারক্তি ও খুনোখুনিতে ভরিয়ে দিতে চাচ্ছে। এই দলটির পরতে পরতে জড়িয়ে আছে মানবাত্মার অবমাননার বিভিন্ন দিক। জনগণের হাড়গোড় চিবিয়ে এরা ভয়ঙ্কর নরপিশাচে পরিণত হয়েছে। আর দেশব্যাপী এই পিশাচদের দোর্দণ্ড পদচারণার প্রধান কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে ফেনী জেলাকে। ফেনী শহর এখন বিবেকবর্জিত সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মানবিক বিপর্যয়ে সহায়তা দিতে বাধাদানের উদ্দেশ্যে তারা আমার গাড়িবহরে চৈতন্যহীন বর্বর আক্রমণ চালাতে দ্বিধা করেনি। শুধু অসংখ্য গাড়ি কিংবা দলের নেতাকর্মীদের আঘাত করা নয়, তারা দায়িত্বরত গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ওপরও নৃশংস আঘাত করেছে এবং তাদের যানবাহন ভাঙচুর করেছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘দেশে এখন জবাবদিহিতাহীন নির্মম দুঃশাসন বিরাজমান বলেই সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া বিস্তার লাভ ঘটেছে। তাদের সৃষ্ট অবসন্ন গণতন্ত্রে মানুষকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। দেশে ন্যায়বিচার মহাশূন্যে বিলীন হয়ে গেছে। বিচারহীনতার কারণেই সন্ত্রাসীরা বেআইনি কাজ করতে উৎসাহিত হচ্ছে। এরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়া দূরে থাকুক বরং ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে জনগণের ওপর রক্তাক্ত আগ্রাসনের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজও আমার গাড়িবহর ঢাকায় ফেরার পথে ফেনী শহর অতিক্রম করার সময় পেট্রলবোমা নিক্ষেপসহ দুটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে সন্ত্রাসী আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে- তা সরকারের বর্বরতম পরিকল্পনারই অংশ। আমি আজ গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানাচ্ছি।’
অপর এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সন্ত্রাসকে পুঁজি করে বিএনপির চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে বিএনপিকে পর্যুদস্ত করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরূপ জনগণের কাছে বিকৃত রূপ ধারণ করেছে। সরকারের অপকর্মের বোঝা এতই ভারি হয়ে গেছে যে তারা মিথ্যাচার ও সন্ত্রাসকেই এখন আদর্শিক কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করেছে। কিন্তু কোনো নীলনকশাই সফল হবে না। বরং এসব রক্তাক্ত পথ অবলম্বন করে আওয়ামী সরকার জনগণের মন থেকে চিরতরে মুছে যাচ্ছে, পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলা ও দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের ওপর দলন-পীড়নের ফলে বিএনপি এবং দলের নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তার ব্যারোমিটার ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।’
গত শনিবার দুপুরে খালেদা জিয়া রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে রওয়ানা দেন। ফেনী পৌঁছার আগে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে বেশ কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহত হন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন। পরে ফেনী সার্কিট হাউজে যাত্রাবিরতি শেষে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে মিরসরাইয়ে আরেক দফায় খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে ঢিল ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে খালেদা জিয়ার গাড়ির কোনো ক্ষতি হয়নি। আজ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরার পথে মহিপালে আবারও হামলার মুখে পড়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর। এ সময় ককটেলও ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে খালেদার গাড়িবহরের কোনো গাড়ির ক্ষতি না হলেও পুড়ে গেছে দুটি বাস।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন