মঠবাড়িয়ায় এতিমের টাকা নিয়ে নয় ছয়: ভুয়া তালিকায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ট হস্তান্তর

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকে ম্যানেজ করে এতিমের টাকা নয় ছয় করার অভিযোগ উঠেছে একাধিক এতিমখানার সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে। ভুয়া তালিকা যাচাই বাছাই না করেই সভাপতি ও সম্পাদকের অনুকূলে ক্রস চেকের মাধ্যমে ক্যাপিটেশন গ্রান্ট হস্তান্তর করেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শফিকুল আলম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুলিশাখালী ইউনিয়নের পশ্চিম লক্ষণা এতিমখানায় এ বছরের জুন মাসে ৩০ জন নিবাসীর বিপরীতে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৩৩৩ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।১১ জন উপস্থিত থাকলেও বাস্তবে সেখানে এতিম রয়েছে মাত্র ১ জন। পরিদর্শনের সময় এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা আবু সালেহের ছেলেকেও বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয় এতিমখানায়।

ধানিসাফা ইউনিয়নের ফুলঝুড়ি গিয়াশিয়া এতিমখানায় প্রতি ৬ মাস পরপর ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। ১২ জনের নামে ক্যাপিটেশন গ্রান্ট থাকলেও উপস্থিত আছে মাত্র ৪ জন। যদিও এরমধ্যে এতিম নিবাসী নেই একজনও। সমাজসেবা অফিসের কোন মনিটরিং না থাকায় এতিমখানার নীতিমালা মানেন না এতিমখানাটির সভাপতি সায়েদ মোল্লা।

তুষখালী বুড়ির চর আলহাজ্ব হাফেজ মোঃ আব্দুল খালেক মাসুমিয়া এতিমখানায় ১২ জন এতিম নিবাসীর বিপরীতে ৬ মাস পরপর ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। এতিমখানা ও মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ খালেক সরকারি এ বরাদ্দ নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন।এতিমখানার সভাপতি হারুন অর রশীদকে জোরপূর্বক দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি এ বিষয়ে কোন খোঁজ খবর রাখেন না।তারপরেও সমাজসেবা অফিস থেকে এখানে ক্যাপিটেশন গ্রান্ট কেন হস্তান্তর করা হয়েছে তার সদুত্তর দিতে পারেননি উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শফিকুল আলম।

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শফিকুল আলম জানান, পশ্চিম লক্ষণা এতিমখানায় অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট ৩০ থেকে কমিয়ে ১৭ করা হয়েছে। গিয়াশিয়া এতিমখানায় খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বুড়ির চর মাসুমিয়া এতিমখানার পরিচালক হাফেজ আব্দুল খালেক সরকারি টাকা নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন। তার পরেও এবারের মত কমিটির সেক্রেটারীর হাতে চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাইয়ুম জানান, এতিমখানা পরিচালনায় অনিয়মের বিষয় খতিয়ে দেখে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শফিকুল আলম নিজ উপজেলায় চাকরি করতে পারেন কিনা এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, বিধিমালা দেখে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।