যশোরের মণিরামপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরাদেহ উদ্ধার, স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ি পুলিশ হেফাজতে

যশোরের মণিরামপুরে নওয়াল জামান বরিশা(১৯) নামের এক গৃহবধূর মরাদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি-২০২৩) দুপুরে উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের পাঁচাকড়ি গ্রাম থেকে মরাদেহটি উদ্ধার করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে- বারিশাকে পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর গলায় দড়ি দিয়ে সিলিংফ্যানের সাথে ঝুঁলিয়ে রেখে এলাকায় আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ বারিশার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ চারজনকে হেফাজতে নিয়েছে।

নিহত নওয়াল জামান বরিশা যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের কলেজশিক্ষক সবুজ হোসেনের মেয়ে এবং একই গ্রামের আজমত ফকিরের ছেলে মাদ্রাসাছাত্র আরশিল কবিরের স্ত্রী।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়- এক বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেন আরশিল কবির ও স্কুলছাত্রী নওয়াল জামান বরিশা। কিন্তু অপ্রাপ্ত বয়সসহ বিভিন্ন কারণে এ বিয়েতে বরিশার বাবা-মায়ের মত ছিল না। এ কারণে তারা মেয়েকে উদ্ধারের জন্য থানায় অভিযোগ করেন।

নেহালপুর ফাড়ির ইনচার্জ এসআই আতিকুজ্জামান জানান- অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় বিয়ের তিনমাস পর স্বামীর বাড়ি থেকে বরিশাকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই বরিশা বাবা-মায়ের কাছ থেকে পালিয়ে আবার স্বামীর বাড়িতে চলে যান। এ কারণে অভিমান করে বরিশার বাবা-মা আর কখনও তার খোঁজখবর নেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন প্রতিবেশি জানান- শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। কথা কাটাকটির এক পর্যায়ে আরশিল কবির তার স্ত্রী বরিশাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে আরশিল জানান- রাত একটার দিকে তিনি বাড়িতে গিয়ে ঘরের মধ্যে সিলিংফ্যানের সাথে তার স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় বরিশাকে উদ্ধারের পর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আলাউদ্দিনের কাছে নেওয়া হয়। তখন পল্লী চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে রোববার দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ ওই গৃহবধূর মরাদেহ উদ্ধার করে।

এসআই আতিকুজ্জামান জানান- মৃত এই গৃহবধূর কান এবং মুখসহ বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ফলে বরিশার মৃত্যু স্বাভাবিক না হওয়ায় মরাদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মণিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান জানান- প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই গৃহবধূর স্বামী আরশিল কবির, শ্বশুর আজমত হোসেন, শাশুড়ি আসমা খাতুন এবং চাচি শাশুড়ি শিল্পী বেগমকে থানায় আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।