মধ্যরাতের মধ্যে বহিরাগতদের খুলনা ছাড়ার নির্দেশ

খুলনা সিটি করপোরেশনে আগামী ১৫ মে (মঙ্গলবার) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্রে করে যারা এই সিটির বাসিন্দা বা ভোটার নন, তাদেরকে শনিবার মধ্যরাতের মধ্যে (রাত ১২টার আগে) নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া রোববার মধ্যরাত থেকে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারণাও বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে ইসির যুগ্ম-সচিব (চলতি দায়িত্ব) ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত পরিপত্র-৭ এ রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে নির্বাচনে দায়িত্বপালন করা ইসির দেয়া কার্ডধারীরা সেখানে থাকতে পারবেন।

নির্বাচনী প্রচারণার নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী ৩২ ঘণ্টা অর্থাৎ ১৩ মে রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১৭ মে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় কোনো ব্যক্তি জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান করতে এবং কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা সংঘটিত করতে বা তাতে যোগদান করতে পারবেন না। কোনো ব্যক্তি উক্ত বিধান লঙ্ঘন করলে অন্যূন ছয় মাস থেকে অনধিক সাত বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, কোনো ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজ ব্যাসার্ধের মধ্যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষের কাউকে ক্যাম্প স্থাপন করতে দেয়া যাবে না। তবে এ নিষেধাজ্ঞা স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার এখতিয়ার ক্ষুন্ন করবে না।

যানবাহনের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ভোটের আগের দিন সোমবার দিবাগত মধ্যরাত (রাত ১২টা থেকে) ভোটের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত (রাত ১২টা) পর্যন্ত বেবি টেক্সি/অটোরিকশা, ইজিবাইক, ট্যাক্সি ক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিক আপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পো প্রভৃতি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী তিন দিন আগে থেকে অর্থাৎ রোববার মধ্যরাত (রাত ১২টা) থেকে ভোটগ্রহণের পরের দিন অর্থাৎ বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। তবে জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী/তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে (এই বিধিনিষেধ) শিথিলতা থাকবে। তাছাড়া নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি/বিদেশি সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র থাকতে হবে।

এছাড়াও নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জাতীয় মহাসড়ক (হাইওয়ে), বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় যান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ভোটের দিনের পূর্ববর্তী রাত অর্থাৎ সোমবার দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে গ্রহণের দিন মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ, ইঞ্জিন চালিত সকল ধরনের নৌ-যান ও স্পিট বোট চলাচল করতে পারবে না। তবে জনগণ বা ভোটারদের চলাচলের জন্য ক্ষুদ্র নৌযান চলাচল নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখতে বলা হয়েছে।

এছাড়া জানা গেছে, এ সিটিতে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন। ভোটের আগে ও পরে মোট চার দিন প্রতিটি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন র‍্যাব এবং দুই ওয়ার্ডে এক কোম্পানি বিজিবি সদস্য টহল ও রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে নির্বাচনের মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন।

এছাড়া প্রার্থীদের আচরণবিধি তদারকিতে থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং গুরুতর অপরাধের শাস্তির জন্য সামারি ট্রায়াল করে বিচার করবেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। ইতোমধ্যে আচরণবিধি মনিটরিংয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সিটি এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত হিসেবে টহল শুরু করেছেন।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, খুলনা সিটি করপোরেশনে পুলিশ-এপিবিএন-আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য নিয়ে গঠিত ১০টি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স, র‍্যাবের টিম থাকবে ৩১টি আর বিজিবি থাকবে ১৬ প্লাটুন। এছাড়া এ সিটিতে ৪৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।