মধ্যরাতে ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত অনেকে
মধ্যরাতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলেছে। সংঘর্ষ শুরুর সাড়ে তিন ঘণ্টা পার হলেও সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলেছেই। এতে উভয়পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকেও নীলক্ষেত মোড় এলাকায় উভয়পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।
নীলক্ষেত বই মার্কেটের সামনের রাস্তায় ঢাবি শিক্ষার্থীরা এবং নিউমার্কেট এলাকায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। উভয়পক্ষের আহতের সঠিক সংখ্যা জানা না গেলেও তা ২০ জনের বেশি বলে নিশ্চিত করেছেন উভয়পক্ষের শিক্ষার্থীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করলেও মধ্যরাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলা অবস্থায়ই সংঘর্ষস্থলে হাজির হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার চেষ্টা করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন তিনি।
রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নীলক্ষেত এলাকায় আসেন হাসনাত। এ সময় তিনি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা তার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। এরপর হাসনাত উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করলে নিজেই উভয়পক্ষের তোপের মুখে পড়েন।
এর আগে রাত ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের সামনে থেকে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে পৌঁছান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীরা হলের সামনে অবস্থান নেন।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে ধাওয়া দিয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নীলক্ষেত এলাকা পার করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।
সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ সাত কলেজের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে অপমান করেন। এর প্রতিবাদে তাঁরা এই প্রতিবাদ করছেন। তাঁরা বলছেন, তাঁদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিতে হবে এবং সহ-উপাচার্যকে তাঁর আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ বলেন, ‘তারা এসেছিল আমার সঙ্গে কথা বলতে। তখন আমি তাদের বলি, তোমরা সবাই না এসে দুজন আসো। কিন্তু অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ধাক্কাধাক্কি করে ভেতরে ঢুকে যায়। ঘটনা এতটুকুই। সেখানে তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করা হয়নি।’
মামুন আহমেদ আরো জানান, শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা বিষয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সাত কলেজের বিষয়ে যে কমিটি আছে, তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
পরে গভীর রাতে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ এক বার্তায় এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে, শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি না করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা, ভর্তি পরীক্ষায় ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটতে হবে ও সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত নতুন অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফি জমা রাখতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন