মহাকাশ থেকে ফিরে বেজোস বললেন, পৃথিবী এত ছোট্ট কেন!
বিশ্বের শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস ও তার তিন সঙ্গী মহাকাশ ভ্রমণ শেষে সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন । নিজের কোম্পানির বানানো রকেটে চড়ে মঙ্গলবার মহাকাশ ঘুরে এলেন আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। ফিরে এসে মহাকাশ ভ্রমণের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বেজোস বললেন, এটা খুবই আনন্দদায়ক ছিল এই ভ্রমণ। এটা আমার জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা। মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে মনে হয়েছে, আমাদের গ্রহ এত ছোট্ট কেন! খবর রয়টার্স ও সিএনএনের।
মহাকাশ নিয়ে বেজোস স্বপ্ন দেখেছিলেন বেশ আগেই। বুঝতে পেরেছিলেন, ভবিষ্যৎ বিশ্বে মহাকাশ ব্যবসাটা বেশ জমে উঠবে। বেজোস গড়ে তোলেন মহাকাশ সংক্রান্ত কোম্পানি ব্লু অরিজিন। শুরু মহাকাশ পর্যটনকে জনপ্রিয় করতে ব্লু অরিজিনের মাধ্যমে কাজ শুরু করেন বেজোস।
২০১৯ সালে বেজোস জানান, ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদে নতুন করে মানুষ পাঠাবে ব্লু অরিজিন। একই সঙ্গে তিনি নিজেও মহাকাশে ভ্রমণ করবেন বলে জানান। সেই থেকে চলছিল প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে ব্লু অরিজিন মহাকাশে মানুষ নিতে বানিয়ে ফেলেছে বিশেষ রকেট নিউ শেপার্ড। এই রকেটে চড়েই আজ মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্ন পূরণ করেছেন বেজোস।
বেজোসের স্বপ্ন পূরণের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ ছিল গতকাল মঙ্গলবার। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম টেক্সাসের ভ্যান হর্নের নিজস্ব উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে সকাল ৯টা ১২ মিনিটে বেজোস ও তার সঙ্গীদের নিয়ে নিউ শেপার্ড রকেট মহাকাশের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেন। মহাকাশ যাত্রায় বেজোসের সঙ্গী হয়েছেন আরও তিনজন। তাদের মধ্যে রয়েছেন তার ছোট ভাই মার্ক বেজোস। রয়েছেন বিশ্বের প্রথম দিককার বিমানচালক ৮২ বছরের ম্যারি ওয়ালেচ (ওয়্যালি ফাঙ্ক নামে সমধিক পরিচিত) এবং নেদারল্যান্ডসের একটি প্রাইভেট ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট প্রতিষ্ঠানের সিইওর ১৮ বছরের ছেলে ওলিভার ড্যামেন।
উৎক্ষেপণের পর প্রায় ৭৬ কিলোমিটার গিয়ে তাদের বহনকারী ক্যাপসুলটি রকেট থেকে আলাদা হয়। পরে উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ২ মাইল দূরে রকেটটি নিরাপদে নেমে আসে। আর ক্যাপসুলটি বেজোস ও তার সঙ্গীদের নিয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও মহাকাশের সীমানা টানা কারমান লাইন অতিক্রম করে। ১০৬ কিলোমিটার বা ৩ লাখ ৫০ হাজার ফুট ওপরে উড়ে যায় সেটি। এরপর ১০ মিনিটের মহাকাশযাত্রা শেষে আরোহীদের নিয়ে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসে।
বেজোসের আগে গত ১২ জুলাই মহাকাশের দ্বারপ্রান্তে ভ্রমণের পর পৃথিবীতে ফিরে আসেন ধনকুবের ব্যবসায়ী রিচার্ড ব্র্যানসন। যুক্তরাজ্যের এই ব্যবসায়ীর মহাকাশযান ভার্জিন গ্যালাকটিক যুক্তরাষ্ট্রের নিউমেক্সিকোতে নিরাপদে অবতরণ করে। ঘণ্টাব্যাপী তার ওই যাত্রায় মহাকাশযানটি প্রতি ঘণ্টায় তিন হাজার কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে উড়ে যায়। এ সময় কয়েক মিনিট ধরে রকেটের ছয় যাত্রী ভরশূন্যতার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। মহাকাশে পর্যটন ব্যবসা শুরুর নতুন দ্বিগন্ত উন্মোচনের অংশ হিসেবে ভার্জিন গ্যালাকটিক রকেট প্লেনে যাত্রা করেন রিচার্ড ব্র্যানসন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন