মাগুরার বিতর্কিত চিকিৎসক মাসুদুল হকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা


মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরায় বুধবার দুপুরে মাগুরার বিতর্কিত চিকিৎসক মাসুদুল হক, তার স্ত্রী জাহানারা বেগম ও তাদের মালিকানাধীন জাহান ক্লিনিকের ম্যানেজার সাগরকে আসামী করা ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন জেলার শ্রীপুর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের মনজুর রহমান নামে এক ভুক্তভোগী। মাগুরা সদর থানায় তিনি এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় বাদি মনজুর রহমান অভিযোগ করেছেন ,২০১৮ সালের ২২ মার্চ মনজুর রহমানের অন্তঃস্বত্বা স্ত্রী ছালমা বেগমকে (৩০) নিয়ে রাত ৮টার দিকে ইজিবাইকে তিনি মাগুরা সদর হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে মাগুরা শহরের কাউন্সিলপাড়ায় জাহান ক্লিনিকের সামনে এলে আসামীরা তার স্ত্রীকে বহনকারি ইজিবাইক ঠেকিয়ে ছালমা বেগমকে জোরপূর্বক জাহান ক্লিনিকে ভর্তি করে। কিন্তু পরবর্তীতে ছালমা বেগমকে সেখান থেকে শহরের জমির উদ্দিন সড়কে আলেয়া ক্লিনিক নামে অন্য একটি ক্লিনিকে স্থানান্তর করে। ওইদিন রাত ৩টার দিকে ডাক্তার মাসুদুল হক ১৫ হাজার টাকার চুক্তিতে আলেয়া ক্লিনিকে ছালমার শরীরে অস্ত্রপচার করে। অস্ত্রপচারের সময় অদক্ষতার কারণে মাসুদুল হক প্রসুতি ছালমা বেগমের জরায়ুর নাড়ি কটে ফেলে। এ সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের কারণে ছালমা বেগম মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রæত ওই ক্লিনিক থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ২৬শে মার্চ মারা যান ছালমা বেগম। এ বিষয়ে মনজুর রহমান আইনি পদক্ষেপ নিতে গেলে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে দিয়ে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। সম্প্রতি মাসুদুল হকের অপকর্মের বিষয়ে স্থানীয় জনগনের বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রশাসনিক পদক্ষেপে সাহস পেয়ে মনজুর রহমান এ মামলা করছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
এ ব্যাপারে মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত মাসুদুল হককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ’
প্রসঙ্গত, জেলা ক্লিনিক মালিক সমিতিসহ স্থানীয়দের অভিযোগ-মাসুদুল হক নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মাগুরায় অস্ত্রোপচারসহ নানা চিকিৎসা তৎপরতা চালাচ্ছে। সে নিজেকে এমবিবিএস ডিগ্রি ধারী হিসেবে পরিচয় দেবার পাশাপাশি পিজিটি, সিডিডি সার্জন এ ধরণের যোগ্যতার কথা উল্লেখ করেছেন। সে আসলে এইচএসসি পাশ। পরে ১৫ বছর রাশিয়ায় থেকে একটি ডিপ্লোমা সনদ জোগাড় করেছে। দেশে ফিরে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়ে অস্ত্রোপচারসহ নানা প্রকার চিকিৎসা শুরু করে । তার ভুল অস্ত্রোপচারে বেশ কয়েকজন রোগী মারা গিয়েছে। অনেকে জটিল অসুস্থতায় ভুগছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার স্থানীয় জনগণ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও ঝাড়– মিছিল করেছে। এছাড়া মাগুরার সিভিল সার্জন প্রদীপ কুমার সাহা প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে মাসুদুল হকের সমস্ত চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন