মাটির নিচে সন্ধান মিললো আরেক পৃথিবীর!
মাটির নিচে সন্ধান মিললো- গুহা শব্দটি শুনলে প্রথমে আমাদের কল্পনায় যে দৃশ্যটি ধরা পরে, মাটি বা পাথরে ঢাকা অন্ধকার কোন এক জগৎ। কোথাও হয়তো ফাঁকফোকর দিয়ে দেখা মেলে সূর্য কিরনের এবং ভেতরে স্যাতস্যাতে পরিবেশ আর বিশাক্ত গ্যাসের উপস্থিতি।
কিন্তু সম্প্রতি চীনের চঙকিং প্রদেশে আবিষ্কার হয়েছে এমন এক গুহা, যে গুহার নিজিস্ব আলাদা আবহাওয়া ব্যবস্থা রয়েছে। পৃথিবীতে যেমন আকাশ রয়েছে, আকাশে মেঘ এবং কুয়াশা রয়েছে, তেমনি এই গুহার ভেতরেও রয়েছে আলাদা আকাশ।
সেই আকাশে রয়েছে মেঘ ও কুয়াশা। শুধু তাই নয়, গুহাটির মধ্যে খাল, বিল, পাহাড়সহ রয়েছে আরো অনেক কিছু। চীনের এই গুহাটির নাম ‘ইয়ার ওয়াং ডং’। চঙকিং প্রদেশের বাসিন্দারা অনেক আগে থেকেই গুহাটি সম্পর্কে জানতেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের গুহাটির সামান্য ভিতরে যাতায়াতও ছিল। তবে তারা ভিতরের কোন দৃশ্য ধারণ করে বাইরে নিয়ে আসেননি। আর স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়া বাইরের কেউই তেমন যেতেন না গুহাটির মধ্যে। যে কারণে ‘ইয়ার ওয়াং ডং’ গুহাটি সম্পর্কে মানুষ অজানা ছিল।
গুহা বিশেষজ্ঞ এবং ফটোগ্রাফারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল ‘ইয়ার ওয়াং ডং’ গুহার গোপনীয়তা আবিষ্কার করেন এবং ভেতরের বেশ কিছু দুর্লভ ছবি তুলে নিয়ে আসেন। অভিযাত্রীদের মতে, গুহাটির ভিতরে মেঘ, বালুকনা, জলীয় বাষ্পসহ রয়েছে আলাদা আবহাওয়া যা অনেকটা শীতল।
আবহাওয়ার পাশাপাশি আর্দ্রতাও শীতল। যে কারণে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ অনেকটা কষ্টসাধ্য। গুহার ভিতরে যে খাল রয়েছে তা খুবই ভয়ঙ্কর ও বিধ্বংসী। কেননা এসব খালের জলেতে রয়েছে তীব্র স্রোত যা সহজেই কাউকে ভাসিয়ে নিতে পারে।
অভিযাত্রী দলের একজন সদস্য রবি শোনের ভাষ্যমতে, “এর আগে এত বিস্তৃত কোনো গুহা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। ‘ইয়ার ওয়াং ডং’-এর মধ্যে রয়েছে অসাধারণ কিছু বিষয় যা সত্যি আমকে অবাক করেছে। বিশাল এই গুহাটি প্রায় ৮২০ ফুট উঁচু। উপরের অংশের অর্ধেকটাই কুয়াশা এবং মেঘে ঢাকা। গুহাটির ভিতরে যে জল রয়েছে তা নোনতা স্বাদযুক্ত।”
গুহা শব্দটির সাথে একটু বেশিই অ্যাডভেঞ্চার কাজ করে। আমাদের দেশে অবশ্য তেমন কোনো বড় গুহা নেই যেগুলো আছে খুবই ছোট।
এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গুহা হচ্ছে ‘হ্যাং সান ডং’ যা ভিয়েতনামের শেষ সীমানায় লাওস সীমান্তে অবস্থিত। যদিও এখনো জানা যায়নি হ্যাং সান ডং এর থেকেও কি ইয়ার ওয়াং ডং গুহা বড় কি না। হ্যাঁ বিষয়টি জানতে হলে আপাতত আরো কিছুদিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন