মাথাপিছু আয়ে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ

স্বাধীনতার মূল্য ও তাৎপর্য বোঝার সামর্থ্য সকলের হয় না। স্বাধীনতা অর্জন করলেও অনেকে ধরে রাখতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যায় অর্থনৈতিক ব্যর্থতায়। বাংলাদেশের বেলায় এমনটা ঘটেনি। বিশ্বখ্যাত সংবাদপত্র ইকোনমিস্ট এক প্রতিবেদনে বলেছে, পাকিস্তানকে মাথাপিছু আয়ে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।

লন্ডন থেকে প্রকাশিত ইকোনমিস্ট পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘বাংলাদেশ যখন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে তখন পাকিস্তানের তুলনায় এর অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল বেশ দুর্বল। মোট জিডিপিতে শিল্পের অবদান ছিল মাত্র ৬-৭ শতাংশ, যেখানে পাকিস্তানের জিডিপিতে শিল্পের অবদান ছিল ২০ শতাংশ। স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, গৃহহীন করা হয়েছে। যুদ্ধে রাস্তাঘাট, সেতুসহ যোগাযোগের যাবতীয় অবকাঠামো ধ্বংস করে দেয়া হয়। যুদ্ধের আগে এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে কয়েক লাখ মানুষ মারা যায়। স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান তখন অভিযোগ করেছিলেন, পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার তখন গমের বাম্পার ফলন হলেও পূর্ব পাকিস্তানকে তার ন্যায্য ভাগ দেয়নি।

গত মাসে একটা দারুণ তথ্য পাওয়া গেল। মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ পেছনে ফেলেছে পাকিস্তানকে। বাজার বিনিময় হারের হিসেবে বাংলাদেশের বর্তমান মাথাপিছু আয় এক হাজার পাঁচ শ আটত্রিশ মার্কিন ডলার, অন্যদিকে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ এক হাজার চারশ সত্তর ডলার।

বাংলাদেশ তার অর্জনে উদযাপন করতেই পারে। গত দশ বছরে বাংলাদেশ নিয়মিত ভাবে ৬ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। গত দুই বছর প্রবৃদ্ধির হার সাতের উপরে। মোট জিডিপিতে শিল্পের অবদান এখন ২৯ শতাংশ। বাংলাদেশে একসময় পড়নের কাপড়ের অভাব ছিল, ভারত ও পাকিস্তান যৌথভাবে গার্মেন্টস রপ্তানিতে বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে’।

বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামকে ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ’ বলে অভিহিত করে সবাইকে সে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানিয়েছিলেন।