মাদকের থাবায় যুবসমাজ
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2021/08/Arfan-alis-photo.png)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
একটি জাতী ধ্বংস হয় কয়েকটা মাধ্যমে। এর মধ্যে মাদক অন্যতম। দেশ যখন ছাত্র ও যুবসমাজের পায়ে ভর করে এগিয়ে যাবার কথা ঠিক তখনই ভয়াবহ মাদকের থাবা।
বর্তমানে মাদকাসক্তি আমাদের সমাজে এক সর্বনাশা ব্যাধিরূপে বিস্তার লাভ করেছে। মাদকদ্রব্যের বিস্তারে বিশ্ববাসী আজ শঙ্কিত। দুরারোগ্য ব্যাধির মতই মাদক তরুণ ও যুব সমাজকে গ্রাস করছে। যতই দিন যাচ্ছে ততই যেন মাদকের ভয়াবহতা বাড়ছে। বিশেষ করে আমাদের মতো মধ্যম আয়ের দেশের জন্য মাদকাসক্তি একটি বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদকের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি থাকা সত্ত্বেও যেন দেশ ও জাতিকে মাদকমুক্ত করা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মাদকাসক্তি নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, মাদকদ্রব্যের সবচেয়ে বিপদজনক দিক হচ্ছে এটি সমাজের তরুণ ও যুবকদের আকৃষ্ট করে। ফলে জাতির মূল্যবান সম্পদ তরুণ ও যুবকরা মাদকদ্রব্যের মায়াজালে আটকা পড়ে তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। মাদকের ভয়ানক ছোবলে বিনষ্ট হচ্ছে অসংখ্য তরুণ ও যুবকের তাজা প্রাণ, আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে অসংখ্য তরুণ ও যুবকের অমিত সম্ভাবনাময় জীবন। তরুণ ও যুবকরাই হচ্ছে জাতির মেরুদণ্ড। কিন্তু সেই মেরুদণ্ড আজ ভেঙে পড়ছে মাদকের ভয়ানক থাবায়। মাদকের ছোবলে আক্রান্ত হয়ে ধুকে ধুকে মরছে লক্ষ লক্ষ কিশোর, তরুণ ও যুবক। আর্থিক ও সামাজিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের পরিবার। মাদকদ্রব্য দাবানলের মতই ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন শহরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে ও স্কুল-কলেজ, ভার্সিটিতে।
নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক এমদাদুল হক ২০১৮ সালে এক গবেষণায় বলেছেন, দেশে প্রায় ৭০ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে, যাদের অধিকাংশই ইয়াবাসেবী। অন্য একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, ২০১০ সালে বাংলাদেশে মাদকসেবীর সংখ্যা ছিল ৪৬ লাখ, বর্তমানে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ লাখ। যার মধ্যে ইয়াবা আসক্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে এই গবেষণায় উঠে এসেছে,যা দেশের মোট মাদকাসক্তের প্রায় ৪২ ভাগ। মাদকসেবীর মধ্যে ৮০ ভাগের বয়সই ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, বাকি ২০ ভাগ নানা বয়সের পুরুষ, নারী ও শিশু।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, বাংলাদেশে মাদকসেবীর সংখ্যা ৬০ লাখ, এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ইয়াবা আসক্ত। বাংলাদেশে এক সময় মাদক হিসাবে হেরোইন ও ফেনসিডিল বহুল প্রচলিত থাকলেও ১৯৯৯ সাল থেকে ভয়াবহ মাদক ইয়াবা ধীরে ধীরে সে স্থান দখল করে নেয়।মাদকের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে মাদকের সরবরাহও বেড়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের প্রায় ৩০ টি রুটের ৫১২ টি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য প্রবেশ করছে। এসব পয়েন্টে বিজিবি এর বিশেষ নজরদারি থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন হেরোইন, ফেনসিডিল, প্যাথেডিন, আফিম, বিয়ার, মদ, গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য প্রবেশ করছে।
এইসব প্রতিরোধ করতে দেশ ও সমাজের পাশাপাশি ছাত্র/যুবসমাজের ভূমিকা অপরসীম।
লেখক : আরফান আলী
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন