মাদারীপুরের কালকিনিতে আড়িয়ালখাঁ নদে ভাঙ্গন

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় আড়িয়ালখাঁ নদী গর্ভে শতাধিক বসতবাড়ি বিলিন হয়ে দিশেহারায় পড়েছেন ভাঙ্গন কবলিত মানুষ।

রোববার (২৮ আগস্ট) সকালে থেকে তাদের কয়েকশত একর ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে যায়। এদিকে আবার নতুন করে ভাঙ্গন আতঙ্ককের মধ্যে রয়েছে নদীর পাড়ের প্রায় শতাধিক পরিবার, বাজার, মসজিদসহ বিভিন্ন শিক্ষা- প্রতিষ্ঠান। যে কোন সময় আড়িয়াল খাঁ ভাঙ্গনে চলে যেতে পারে তাদের বাড়িঘর ও ফসলি জমি। এদিকে অনেকে বসতবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে অন্যস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

অপরদিকে নদী ভাঙ্গনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল কাদের, ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহিম মুরাদ ও ইউপি তহশিলদার রেবেকা সুলতানা।

সরেজমিন ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানাগেছে, আড়িয়াল খাঁ নদ বয়ে গেছে উপজেলার প্রত্যন্তঞ্চল সাহেবরামপুর এলাকার পূর্ব সাহেবরামপুর লঞ্চঘাট ও নতুন আন্ডারচর গ্রামের উপর দিয়ে। এসব এলাকায় বছরের পর বছর আড়িয়াল খাঁর ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে হাজারো বাড়িঘর। এ বছর ভাঙ্গনে নতুন করে আড়িয়াল খাঁ নদে গর্ভে চলে গেছে পূর্ব সাহেবরামপুর গ্রামের হিরন সরদার, সাহাদাত সরদার, শাহাবুদ্দিন সরদার জালাল সরদার, মজিবর বেপারী, সিরাজ ফকির, আক্কাস আকন, মোয়াজ্জেম ফকির, মোশারফ সরদার ও সাবেক ইউপি সদস্য আদেল বেপারীর বসতঘরসহ প্রায় শতাধিক বাড়িঘর। এ ছাড়া নতুন করে বর্তমানে ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে আলী সরদার, সবুজ সরদার, লতীফ সরদার, ¯^পন বেপারী, শাহীন সরদার, সজীব বেপারী, কালাম বেপারী, মন্টু সরদার, সুলতান বেপারী, বাদশা হাওলাদার, শাহাদাত সরদার, আলিম সরদার, আজিজুল ফকির ও সোহাগ ফকিরসহ শতাধিক বাড়িঘর।

অপরদিকে বর্তমানে আবার নুতন করে আন্ডারচর গ্রামের চানমিয়া সরদার, বজলু সরদার, কামাল হাওলাদার, বিউটি বেগম, হাচিনা বেগম ও দাদন সরদারের বাড়িঘর আড়িয়াল খাঁ নদে বিলিন হয়ে গেছে। এদিকে নদী ভাঙ্গন আতঙ্কে মধ্যে রয়েছে নতুন আন্ডারচর বঙ্গবন্ধু কলেজ, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নবারুন উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। এসব এলাকায় ভাঙ্গন কবলিত মানুষ তাদের ভিটামাটি হারিয়ে পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সাদিকুর রহমান ও হাছিনা বেগমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেয়া হলে আমাদের পুরো গ্রাম নদীর পেটে চলে যাবে।
আন্ডারচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদ বিগত দিনে হাজারো বসতবাড়ি কেড়ে নিয়েছে। বর্তমানে জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না করা হলে বাকি ফসলি জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনমতে বাঁচানো সম্ভব হবে না।

সাহেবরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহিম মুরাদ সরদার বলেন, বর্তমানে আড়িয়াল নদে পুর্ব সাহেবরামপুর গ্রাম ও লঞ্চঘাট এলাকার প্রায় ১৫ একর ফসলি জমি, এবং শতাধিক বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে নতুন করে দেড় কিলোমিটার এলাকারজুরে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আমরা প্রশাসনের সহযোগীতা চাই।

মাদারীপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল কাদের বলেন, নদী ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এবং ভাঙ্গন ঠেকাতে সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।