মাদারীপুরে লাশ উত্তোলনে পরিবারের আপত্তি; তোপের মুখে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট

মাদারীপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাওহীদ সন্ন্যামাত ও রোমান বেপারী নিহত ঘটনার মামলা দায়ের পর লাশ ময়না তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলনে গেলে দুই পরিবারই আপত্তি জানায়। কয়েকঘন্টা অপেক্ষা করে পরিবারের বাঁধার মুখে ফিরে আসে জেলা প্রশাসনের দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। মামলার বাদী নিহতের মা-বাবা না হওয়ায় লাশ উত্তোলন করতে দেয়া হবে না বলে জানায় স্বজনরা।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা। মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের সুইচারভাঙ্গা গ্রামে তাওহীত সন্ন্যামাতের কবর থেকে লাশ উত্তোলনে আসেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাঈম সরকার। এতে আপত্তি জানায় পরিবারের সদস্যরা। বাঁধার মুখে ফিরে আসেন ম্যাজিস্ট্রেট ও অন্যরা।

এদিকে আদালতের নির্দেশে ময়না তদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনে ঘটমাঝি ইউনিয়নের ভদ্রখোলা এলাকায় যান আরেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম। সেখানে পড়েন তোপের মুখে। স্ত্রী কাজল আক্তার বাদী হওয়ায় কোন অবস্থাতেই লাশ উত্তোলন করতে দিবে না বলে জানায় নিহত রোমান বেপারীর মা-বাবা।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বলেন, বিষয়টি আদালতে অবগত করা হবে। আদালতের সিদ্ধান্তেই নেয়া হবে পরবর্তী ব্যবস্থা। পরিবারের অনুমতি না পেলে লাশ কবর থেকে উত্তোলনের কোন সুযোগই নেই।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে খাগদী এলাকায় নিহত হয় তাওহীদ সন্ন্যামাত ও রোমান বেপারী নামে দুই যুবক। ২৪ আগস্ট নিহত পিকআপ চালক রোমানের স্ত্রী কাজল আক্তার বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। অপরদিকে নিহত রাজমিস্ত্রী তাওহীদ সন্ন্যামাত হত্যার ঘটনায় সংক্ষুব্ধ জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুল হাসান বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় আরেকটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার আসামীরা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মাদারীপুর-০১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ নূর-ই আলম লিটন চৌধুরী, মাদারীপুর-০২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, মাদারীপুর-০৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউন্দিন নাছিম, মাদারীপুর-০৩ আসনের আরেক সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুনীর চৌধুরীসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।