মানুষের দ্বিমুখী চরিত্র নিয়ে কোরআনের ১০ আয়াত

বিপদে পড়লে মানুষ আল্লাহকে ডাকে। আর বিপদ চলে গেলে মানুষ আল্লাহকে ভুলে যায়। দ্রুত সে অবস্থান বদল করে। অবস্থান বদল মানবচরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। যখন মানুষ বিপদে পড়ে এক রকম কথা বলে, আবার বিপদ মুক্ত হলে তার আসল চরিত্র প্রকাশ পায়। মানুষের এই দ্বিমুখী চরিত্র সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে অসংখ্য আয়াত আছে। এখানে ১০টি আয়াত উল্লেখ করা হলো—
এক. আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সে (মানুষ) যখন বিপদে পড়ে, তখন খুব হা-হুতাশ করে। আর যখন বিপদ কেটে যায়, তখন কৃপণ হয়ে যায়।’ (সুরা : মাআরিজ, আয়াত : ২০-২১)
দুই. আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সাগরের মাঝখানে যখন তোমরা বিপদে পড়ো, তখন তোমরা (স্বাভাবিক অবস্থায়) আল্লাহ ছাড়া যাদের ডাকো তাদের ভুলে যাও। তারপর যখন আল্লাহ তোমাদের স্থলে (সৈকতে) এনে উদ্ধার করেন, তখন তোমরা (আল্লাহর দিক থেকে) মুখ ফিরিয়ে নাও।’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ৬৭)
তিন. আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষকে যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে, তখন সে শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে আমাকে (আল্লাহকে) ডাকতে থাকে। তারপর আমি যখন তার দুঃখ-দৈন্য দূর করে দিই, তখন মানুষ এমন ভাব করে যেন সে আপতিত দুঃখ-কষ্টের জন্য কখনোই আমাকে ডাকেনি।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ১২)
চার. আল্লাহ তাআলা বলেন, “যদি দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করার পর আমি তাকে সুখ ভোগ করাই, তখন সে বলতে থাকে, ‘আমার বিপদ দূর হয়ে গেছে।’ তখন সে উত্ফুল্ল ও অহংকারী হয়ে যায়।” (সুরা : হুদ, আয়াত : ১০)
পাঁচ. আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন সাগরের ঢেউ মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে ঢেকে ফেলে, তখন মানুষ আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। কিন্তু যখন (আল্লাহ) তাদের সৈকতে ফিরিয়ে এনে উদ্ধার করেন, তখন দেখা যায় (বেশির ভাগ মানুষ অকৃতজ্ঞ) কোনো কোনো মানুষ সরলপথে থাকে।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ৩২)
ছয়. আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষকে যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে, তখন সে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। এরপর আল্লাহ যখন তাকে দয়া করেন, তখন মানুষ ভুলে যায় যে বিপদে পড়ে সে এর আগে আল্লাহকে ডেকেছিল।’ (সুরা : জুমার, আয়াত : ৮)
সাত. আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষকে বিপদ-আপদ স্পর্শ করলে সে আমাকে (আল্লাহকে) ডাকে। যখন আল্লাহর অনুগ্রহে কষ্ট থেকে মুক্তি লাভ করে, তখন (মানুষ) বলতে থাকে, সে নিজের চেষ্টায় এ থেকে মুক্তি পেয়েছে।’ (সুরা : জুমার, আয়াত : ৪৯)
আট. আল্লাহ তাআলা বলেন, “দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করার পর যখন আমি তাকে দয়া করে সুখের স্বাদ দিই, তখন মানুষ বলতে থাকে, ‘এটা তো আমার প্রাপ্যই ছিল। আমি তো মনে করি না কিয়ামত বলে কিছু আছে।’…আবার যখন মানুষ বিপদে-আপদে অমঙ্গলে পড়ে যায়, তখন সে দীর্ঘ প্রার্থনায় বসে যায়।” (সুরা : হা-মিম-সাজদা, আয়াত : ৫০-৫১)
নয়. আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ওরা (মানুষ) যখন পানিপথে চলতে থাকে, তখন পবিত্র মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। আর আমি (আল্লাহ) যখন তাদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিই, তখন মানুষ শিরক করা শুরু করে।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৬৫)
দশ. আল্লাহ তাআলা বলেন, “আল্লাহ যখন মানুষকে দয়া ও সম্মানিত করেন, তখন মানুষ বলে, ‘আমার প্রতিপালক আমাকে সম্মানিত করেছেন।’ আর যখন আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য উপকরণ কমিয়ে দেন, তখন মানুষ বলতে থাকে, ‘আল্লাহ আমাকে হেয় করেছেন।” (সুরা : ফাজর, আয়াত : ১৫-১৬)
এভাবেই মানুষ নিজের প্রয়োজন অনুসারে সুবিধাবাদী চরিত্র ধারণ করে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন



















