‘মার্কিন দূতাবাস ও জাতিসংঘের বিবৃতি শিষ্টাচারবহির্ভূত’
‘সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মার্কিন দূতাবাস যে বক্তব্য দিয়েছে তা অত্যন্ত দু:খজনক। তারা বলেছেন, শিশুদের আন্দোলনকে বর্বরোচিত হামলার মধ্য দিয়ে দমন করা হয়েছে। অথচ এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি। শিশুরা আন্দোলন করেছে, সমাবেশ করেছে তাদের ওপর কোনো হামলা করা হয়নি।’
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে চলমান ঘটনা নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আন্দোলন চলাকালে ঢাকা শহরের প্রকৃত চিত্র নিয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি মার্কিন দূতাবাস। তারা মনগড়া বিবৃতি দিয়েছে। এটা অত্যন্ত দু:খজনক। তাদেরও দেয়া বিবৃতির মধ্যে দিয়ে মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়ে শিষ্টাচারবহির্ভূত নাক গলানোর অপপ্রয়াস করেছেন। আমরা এর নিন্দা করি।
মন্ত্রী বলেন, আমি এ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করছি। মার্কিন দূতাবাসকে এ বিবৃতি প্রত্যাহার করার অনুরোধ করছি। একইসঙ্গে বাংলাদেশে নিয়োজিত জাতিসংঘের যে প্রধান তিনিও এ ধরনের একটি বিবৃতি দিয়েছেন। আমার কথা হচ্ছে এ দুটো বিবৃতিই নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের বিষয়ে সঠিক নয়।
ইনু বলেন, বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা যখন মাঠে নেমে কোনো অরাজকতা ছাড়াই বিভিন্ন যানবাহনে লাইসেন্স চেকিং করে তখন আমরা পুলিশকেও বলেছি, তারা যেন শিক্ষার্থীদের একাজে বাধা না দেয়। এ ফাঁকে তারা বিভিন্ন পরিবহনে অনিয়মগুলো পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালায়। প্রশাসন এসময় তাদের পাহারা দিয়ে রাখে।
ইনু বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধান করেন এবং তাদের নয় দফা দাবি মানতে নির্দেশনা দেন। এর মধ্যে কিছু দাবি প্রধানমন্ত্রী ত্বরিৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্যদিয়ে কার্যকর করা শুরু হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে আমরা খেয়াল করলাম বাইরে থেকে কেউ কেউ উস্কানি দিচ্ছে এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার একটা অপচেষ্টা করা হচ্ছে। কতিপয় চিহ্নিত মহল আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে আক্রমণ করে। সেই ক্ষেত্রে যখন বাইরের উস্কানিদাতাদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের সংঘর্ষ হয় এবং আমরা শিশুদের রক্ষার চেষ্টা করি। তবে পরিষ্কার কথা হচ্ছে শিশুদের ওপর কোনো দমন পীড়ন করা হয়নি।
তিনি বলেন, আমি সরকারের পক্ষ থেকে দেশের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে জাতিসংঘের এ বিবৃতি অনভিপ্রেত মনে করি। এটা অযাচিত বলে মনে করি।
মন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন নয় দফা দাবি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইন তৈরি করা হয়েছে। সব ধরনের দাবিতে সরকারের আন্তরিকতা আছে। আর যারা মিথ্যাচার করার চেষ্টা করেছে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সাংবাদিকদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে ইনু বলেন, কিছু জায়গায় সাংবাদিক বন্ধুদের যারা হামলা করেছে এটা দু:খজনক ঘটনা। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করতে আমরা আজই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিব। তবে আমাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মৌখিকভাবে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। তবে আমি আবারও বলবো কর্তব্যরত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমি এ ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করছি। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য আমরা সজাগ থাকবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারিদের ছবি আমরা সংগ্রহ করেছি। তাদের বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আপনারা বলছেন সাংবাদিকদের ওপর হামলা হলে তথ্য মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এটা সঠিক নয়। আমরা এর আগেও যেসব ঘটনা ঘটেছে সেখানেও ভূমিকা রেখে তা সমাধানের চেষ্টা করেছি। আপনারা খেয়াল করেছেন সম্প্রতি সাংবাদিকরা জঙ্গি হামলার শিকার হচ্ছে বেশি। সরকারের কোনো বাহিনীর হামলার শিকার হচ্ছে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন